সীমান্তে উত্তেজনা, চীন-ভারত সামরিক বাহিনীর আলোচনার উদ্যোগ

লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে আলোচনায় বসছে ভারত ও চীন। আগামী শনিবার (৬ জুন) দুই দেশের মধ্যে সেনা পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
ছবি: এনডিটিভি

লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে আলোচনায় বসছে ভারত ও চীন। আগামী শনিবার (৬ জুন) দুই দেশের মধ্যে সেনা পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, লাদাখে সৃষ্ট সংকট নিয়ে ভারতের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হলে তাতে রাজি হয়েছে চীন।

দুই দেশের সীমান্তবর্তী ভারতের অন্তর্গত চুশুল-মোলদো এলাকায় ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরিন্দর সিং।

লাদাখ সংকট নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বৈঠক ও আলোচনার সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক লক্ষণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগে লাদাখ ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে একাধিকবার স্থানীয় স্তরে আলোচনা হলেও কোনো বৈঠকই ফলপ্রসু হয়নি।

ভারত ও চীনের মধ্যকার বিরোধে মধ্যস্থতা করতে আগ্রহ জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তবে, দুই দেশের কেউই তাতে সাড়া দেননি।

এদিকে, ভারতের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরপরই চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে দেশটির যুদ্ধাস্ত্রের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ওই তালিকায় ভারতের সঙ্গে সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে চীনের কী পরিমাণ অস্ত্র মোতায়েন আছে তা উঠে এসেছে।

গ্লোবাল টাইমস জানায়, গত জানুয়ারিতে ৩০ টন অত্যাধুনিক ট্যাঙ্ক ও ২৫ টন শক্তিশালী কামান ভারতের লাদাখের কাছাকাছি দক্ষিণ-পশ্চিম তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে মোতায়েন করে চীন। এছাড়াও, গত এক মাসে সম্ভাব্য সীমান্ত সংঘাতের প্রস্তুতি হিসেবে ট্যাঙ্ক, হেলিকপ্টার ও অন্যান্য অস্ত্রও কাছাকাছি অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে।   

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেই গত ৫ মে লাদাখে প্রায় আড়াইশ চীনা সেনার সঙ্গে মারামারি হয় ভারতীয় বাহিনীর। লোহার রড, লাঠি এমনকি ইটপাটকেল নিয়েও দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়। চীনা সেনাদের বিরুদ্ধে সীমান্ত অতিক্রম করার অভিযোগ জানায় ভারত।

সেসময় ভারতের সামরিক বাহিনী জানায়, লাদাখে দুই থেকে আড়াই হাজার সেনা মোতায়েন করেছে চীন। প্রায় একশ শিবির তৈরি করেছে তারা। বাঙ্কার নির্মাণের ভারী উপকরণও মজুত করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতও সৈন্য সমাবেশ করে টহল জোরদার করেছে।

নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে একাধিকবার স্থানীয় পর্যায়ের আলোচনা হলেও কোনো সমাধান মেলেনি।

এর আগে, ২০১৭ সালে ডোকালাম সীমান্ত নিয়েও দুই দেশের মধ্যে প্রায় ৩ মাস ধরে সামরিক উত্তেজনা চলেছিল। সেসময় কূটনৈতিক ও সামরিক আলোচনার মাধ্যমেই সংকটের অবসান ঘটে। দিল্লির প্রত্যাশা, এবারও আলোচনার মাধ্যমেই দুই দেশে শান্তি ফিরতে পারে। ১৯৬২ সালে চীনের সঙ্গে সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল ভারত।

ভারত ও চীনের মধ্যে প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা রয়েছে।

Comments