বরিশালে সালিশে জুতার মালা পরিয়ে শাস্তি, ১ আসামি গ্রেপ্তার
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে দাখিল মাদ্রাসার এক কর্মচারী ও স্থানীয় একটি জামে মসজিদের ইমাম (৫০)কে সালিশে জুতার মালা পরানোর ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এই ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ ১০ জনের নামে মামলা করেছেন নির্যাতিত ব্যক্তি।
মেহেন্দীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অসীম কুমার সরকার জানান, এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। বজলু আকন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চেয়ারম্যানসহ অন্যরা পালিয়েছেন। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।
এক শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সালিশে ওই শাস্তি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন দড়িরচর-ভাজুররিয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢী।
এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী মাদ্রাসা কর্মচারী বলেন, ‘৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী মাদ্রাসায় না আসায় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই উপবৃত্তির টাকার জন্য আমার মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনায় শিক্ষার্থীর বাবা উপবৃত্তির ২৪০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে ইউনিয়ন পরিষদে বিচার দেয়। বিচারে চেয়ারম্যান আমাকে মাফ চাইতে বলেন ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। আমি জরিমানা দিতে অস্বীকার করলে নির্যাতন করা হয়। এ সময় সাবেক মেম্বার আমার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়, ভিডিও করে ও ইউনিয়ন পরিষদের সামনে জুতার মালা পড়িয়ে ঘোরানো হয়।’
দড়িরচর-ভাজুররিয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢী জানায়, ‘উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বুধবার ইউনিয়ন পরিষদে সালিশি বৈঠক ডাকা হয়। সালিশে ৮নং ওয়ার্ডের শহীদ মেম্বার ও ৫ নং ওয়ার্ডের ফিরোজ মেম্বার উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ স্বীকার করলে ওই কর্মচারীকে টাকা ফেরতসহ জুতার মালা দেওয়া হয়।’
এদিকে, উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিজুস চন্দ্র দে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দিয়ে বুধবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
তিনি জানান, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার আগেই চেয়ারম্যান যা করেছে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তপন কুমার দাশ জানান, তদন্ত প্রতিবেদন ইউএনও এর কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। রিপোর্টে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিপ্রায় ছিল বলে উল্লেখ রয়েছে। তবে চেয়ারম্যান যা করেছেন সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে।
Comments