এলাকার ‘সজ্জন ব্যক্তি’: হাজী কামালের ‘মানব পাচারকারী’ পরিচয় স্থানীয়দের কাছে অজানা

র্যাবের তথ্য অনুযায়ী কামাল উদ্দিন ওরফে হাজী কামাল (৫৫) গত এক দশকে ৪০০ এর বেশি মানুষকে লিবিয়ায় পাচার করেছে। কিন্তু কুষ্টিয়া সদর এলাকা, যেখানে কামালের বাড়ি, সেখানকার বাসিন্দাদের কাছে এ তথ্য অজানা। তাদের দাবি, ‘অপকর্ম’ সম্পর্কে জানেন না তারা।
গত মঙ্গলবার সকালে কামালের গ্রামের বাড়ী কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আইলচারা ইউনিয়নের খোর্দ আইলচারায় গিয়ে তার পরিবারের সদস্য, আত্মীয় এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা হয়।
জানা যায়, কামাল তার এলাকায় সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রেখে চলতেন। মসজিদ মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দান করতেন। দরিদ্রদের টাকা পয়সা দিতেন।
এছাড়াও এলাকায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন কামাল। সেখানে রাজনৈতিক দলের নেতারাও আসতেন। এক সময় বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত থাকলেও পরে ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় রাজনীতি করতেন।
তার পরিবারের সদস্যদের দাবি, এলাকায় একটি বাড়ি ও মাঠে কিছু জমি ছাড়া কামালের কোন সম্পদ নেই।
র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর তার নিজ এলাকায় নানা আলোচনা চলছে। এলাকার অনেকেই তার বাড়িতে আসছেন।
কামাল হোসেনের বড় ভাই অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক, লুৎফর রহমান বলেন, '১৯৯৪ সালে ডিগ্রিতে ফেল করার পর বাড়ি ছেড়ে চলে যায় কামাল। বেশ কয়েক বছর ঢাকায় কাটিয়ে, বাড়ি ফিরে এসে পাড়ি জমান সৌদি আরব। আড়াই বছর সেখানে টাইলস মিস্ত্রির কাজ শেষে দেশে ফিরে আসেন। এরপর রাজধানী ঢাকায় টাইলস মিস্ত্রির ঠিকাদারি কাজ শুরু করেন। একসময় জড়িয়ে পড়েন "আদম ব্যবসার" সঙ্গে।’
তবে তার পরিবারের দাবি কামাল নিতান্তই একজন ‘দালাল’ হিসেবে কাজ করেছেন। তার নিজের কোন এজেন্সি ছিল না। অন্যের সাথে তিনি ব্যবসা করতেন।
কামাল হোসেনের বোন রফিজা খাতুন দাবি করেন, ‘তার ভাইয়ের বিভিন্ন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট থাকলেও অর্থ নেই।'
তিনি বলেন ‘লিবিয়া পর্যন্ত লোক পৌঁছানোর দায়িত্ব ছিল কামালের।’
এলাকার বাসিন্দা আনিসুজ্জামান জানান,‘ ২০০২ সালে একবার এলাকায় নির্বাচন করবেন বলে পোস্টার বের করেন হাজী কামাল।’
তিনি বলেন, 'ঢাকা থেকে স্ত্রী ও ছেলে নিয়ে এলাকায় আসতেন কামাল। গরু, ছাগল জবাই করে লোকজনকে খাওয়াতেন। মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দান করতেন। এলাকায় তার প্রভাব বাড়তে থাকে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় অনেক শীর্ষ নেতার সাথে তার জানাশোনা ছিল।’
Comments