আস্থা হারাচ্ছে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব

Kumilla_Medical_College_Hos.jpg
ছবি: স্টার

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষার ফলাফলের যথার্থতা প্রশ্ন তুলেছেন বিভিন্ন উপজেলার চিকিৎসকরা। গত ২৩ মে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ল্যাবে পরীক্ষার ফলাফলে জানা যায়, নাঙ্গলকোট উপজেলার ১৪ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত। ৩ জুন ঢাকা থেকে নমুনা পরীক্ষার ফলাফল এলে জানা যায়, তাদের ১০ জনই করোনায় আক্রান্ত নন।

নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দেব দাস দেব দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত ২০ মে আমার হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নমুনা করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। ২৩ মে নমুনা পরীক্ষার ফলাফল আমাদের হাতে আসে। ১৪ জন করোনায় আক্রান্ত জানার পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স লকডাউন করা হয়। তাদের সংক্রমণের উপসর্গ না থাকায় ২৪ মে আবারো নমুনা সংগ্রহ করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়। আইইডিসিআর জানায়, ১০ জন আক্রান্ত নন। ৩ জুন ঢাকা থেকে রিপোর্ট আমাদের হাতে এসে পৌঁছে।’

দেব দাস দেব আরও বলেন, ‘এর বাইরে কুমিল্লা পিসিআর ল্যাব পরীক্ষার ফলাফলে তিন জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত নন বলে জানানো হয়েছিল। তাদের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হলে জানা যায়, তারা তিন জনই করোনায় আক্রান্ত।’

‘আইইডিসিআরের বায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন সুস্থ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজে যোগ দিতে বলেছেন। আমরা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে পরবর্তীতে নমুনা না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি’— বলেন দেব দাস দেব।

দেবিদ্বার উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আহমেদ কবীরও অনাস্থা প্রকাশ করেছেন।

সেন্টার ফর সোশ্যাল সার্ভিসেস-এর পরিচালক অধ্যক্ষ সায়েম মাহবুব বলেন, ‘নাঙ্গলকোটে করোনা ভাইরাস পরীক্ষায় ভুল রিপোর্টের ফলে ৭০ পরিবারে বিপর্যয় নেমে এসেছে। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের দেওয়া ভুল রিপোর্টের কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১৪ দিন লকডাউনে ছিল। যে কারণে ছয় লাখ মানুষ চিকিৎসাবঞ্চিত হয়েছে।’

নাঙ্গলকোট উপজেলার ইতোমধ্যে শনাক্ত ৭০ পরিবারের দাবি, আবারো তাদের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হোক।

সূত্র জানিয়েছে, উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে সংগ্রহ করা ৬০৪ জনের নমুনার ৭০ শতাংশই কুমিল্লা মেডিকেলের ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। আরও ৯২ জনের নমুনা ল্যাবে আছে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. নিয়াতুজ্জামান বলেন, ‘ভুল হতেই পারে। এ নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মোস্তফা কামাল আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, এই পরীক্ষার ফলাফল ৩০ শতাংশ বদলে যেতে পারে। নমুনা সংগ্রহে সতর্ক না হলে কিংবা দেরিতে জমা দিলে সঠিক ফলাফল পাওয়া যায় না। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় নমুনা ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ভালো থাকে না। আমরা প্রতিদিন দুই শিফটে ১৮০ জনের নমুনা পরীক্ষা করতে পারি। কিন্তু নমুনা আসছে সাড়ে ৪৫০ থেকে পাঁচ শ জনের। মেশিন ও জনবলের সংকট রয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English
Starlink logo

BTRC approves licence for Starlink

This is the swiftest recommendation from the BTRC for any such licence, according to a BTRC official.

7h ago