চট্টগ্রামে বিপন্ন প্রজাতির মেছোবাঘ হত্যা
চট্টগ্রামের বাঁশখালি উপজেলার একটি গ্রামে শতাধিক মানুষ ঘণ্টাখানেক ধাওয়া করে ধরার পর একটি বিপন্ন প্রজাতির মেছোবাঘকে (ফিশিং ক্যাট) পিটিয়ে হত্যা করেছে।
গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার কাথুরিয়া ইউনিয়নের বাঘমারা এলাকার নইব্বের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। মেছোবাঘটি দৈর্ঘ্যে সাড়ে তিন ফুট ও উচ্চতায় আড়াই হাত বলে জানিয়েছেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় এ ধরনের মেছোবাঘ একসময় প্রচুর দেখা গেলেও এখন বন-জঙ্গলের পরিধি কমার সঙ্গে সঙ্গে এ প্রজাতিও বিপন্ন হয়ে পড়েছে। প্রকৃতি সংরক্ষণের জোট আইইউসিএন ২০১৫ সালে এ প্রজাতিকে বিপন্ন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
বৃহস্পতিবার এ মেছোবাঘ হত্যার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লেও আজ শুক্রবার পর্যন্ত কিছু জানতে পারেনি বনবিভাগ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাঘমারা এলাকার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আহমদ হোসেনের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে। এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে মোয়াফের (মেছোবাঘের স্থানীয় নাম) উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় লোকজন ওঁত পেতে এ মেছোবাঘটিকে হত্যা করেছে।
জানতে চাইলে ইউপি সদস্য আহমদ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করতে বলেন।
‘আপনি ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করে দেখেন কে মেরেছে। আমি বলতে পারব না’, বলেন তিনি।
আহমদ হোসেনের দাবি, ঘটনাটি তার এলাকায় ঘটেনি। পাশের ওয়ার্ডে ঘটেছে।
কাথুরিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘বাঘমারা এলাকায় পাঁচ-ছয়টি মেছোবাঘ আছে, যেগুলোকে স্থানীয়রা মোয়াফ বলে চেনে।’
তিনি জানান, গত দেড় মাস ধরে ওই এলাকায় সন্ধ্যা হলে মেছোবাঘ মুরগি ও ছাগলের বাচ্চা ধরে নিয়ে যেত। এ নিয়ে এলাকার লোকজন ক্ষুব্ধ ছিল।
গত বুধবার সন্ধ্যায় কেউ একজন একটি মেছোবাঘকে দেখতে পেয়ে সবাইকে জড়ো করে প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে চেষ্টার পর সেটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে বলে জানান তিনি।
বনবিভাগের বাঁশখালি জলদি অভয়ারণ্যের রেঞ্জ অফিসার শেখ আনিসুজ্জমান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে খবর পাওয়ার পর তারা আজ ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন।
এ ঘটনায় খুব শিগগিরই একটি মামলা করবেন বলেও জানান তিনি।
Comments