করোনা আপডেট: কক্সবাজার, ঠাকুরগাঁও, খুলনা, রাঙ্গামাটি, পিরোজপুর
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে আজ শনিবার নমুনা পরীক্ষায় ১০৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৯৪ জন কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা। ঢাকাফেরত আরও পাঁচ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে। খুলনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬০ বছর বয়সী এক করোনা রোগী মারা গেছেন। আর, করোনা উপসর্গ জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে রাঙ্গামাটিতে নিজ বাড়িতে মারা গেছেন অপর এক প্রবীণ। অন্যদিকে, পিরোজপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের প্রায় অর্ধেকই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। দ্য ডেইলি স্টার স্থানীয় সংবাদদাতারা এ সব তথ্য জানিয়েছেন।
কক্সবাজারে আরও ৯৪ জনের করোনা শনাক্ত
কক্সবাজারে মেডিকেল কলেজ ল্যাবে আজ শনিবার ৩৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৯৪ জন কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা।
কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনুপম বড়ুয়া আজ শনিবার এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, জেলায় শনাক্ত হওয়া ৯৪ জনের মধ্যে সদর উপজেলায় রয়েছেন ৪২ জন, চকরিয়ায় একজন, উখিয়ায় ১৯ জন, টেকনাফে সাত জন, রামুতে ২২ জন, মহেশখালীতে একজন ও পেকুয়ায় দুই জন।
এ ছাড়া, মেডিকেল কলেজ ল্যাবে বান্দরবান জেলার সদর উপজেলার পাঁচ জন, রুমা উপজেলার তিন জন ও নাইক্ষ্যংছড়ির দুই জন, চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার দুই জন ও তিন জন এনজিও কর্মীর করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে জানান ডা. অনুপম।
তিনি আরও জানান, কক্সবাজার ল্যাবে এখন অবধি শনাক্ত হওয়া ১০৮৯ জনের মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার জেলার ৯৬৭ জন, বান্দরবান জেলার ৪২ জন, চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া দুই উপজেলার ৪৭ জন, ৩০ জন রোহিঙ্গা ও তিন জন এনজিও কর্মী।
ঠাকুরগাঁওয়ে ঢাকাফেরত আরও পাঁচ জনের করোনা শনাক্ত
ঠাকুরগাঁওয়ে ঢাকাফেরত আরও পাঁচজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত ১৩৫ জনের করোনা শনাক্ত হলো।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহফুজার রহমান সরকার আজ শনিবার রাতে দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘নতুন শনাক্তদের মধ্যে রাণীশংকৈল উপজেলার তিন জন ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুই জন রয়েছেন। তাদের বয়স ২৬ থেকে ৫০ বছর। পাঁচ জনই সম্প্রতি ঢাকা থেকে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরেছেন।’
সিভিল সার্জন জানান, গত ১ জুন তাদের নমুনা সংগ্রহ করে দিনাজপুরে এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় এবং আজ সন্ধ্যায় তাদের রিপোর্ট আসে।
তিনি আরও জানান, ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে আজ শনিবার পর্যন্ত মোট এক হাজার ৯৫৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে এবং এর মধ্যে এক হাজার ৬৩৭ জনের নমুনা পরীক্ষার ফল পাওয়া গেছে। জেলায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৩৫ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৩৬ জন ও দুই জন মারা গেছেন বলে জানান তিনি।
খুলনায় চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর মৃত্যু
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আওতাভুক্ত করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মো. আলী মিয়া (৬০) নামের এক বৃদ্ধ মারা গেছেন।
হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. শেখ ফরিদ উদ্দীন আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘পেশায় ইমাম ওই ব্যক্তি আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে মারা যান। তিনি নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার খাশিয়াল গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘ওই ব্যক্তির ফুসফুসে আগে থেকেই সমস্যা ছিল। গত ২৫ মে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। পাঁচ দিন আগে একবার তার করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছিল। তবে ফুসফুসে মারাত্মক সমস্যা থাকায় তাকে ছাড়া হয়নি। আজ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।’
তার মরদেহ এখনো হাসপাতালে আছে এবং নিয়ম অনুযায়ী হস্তান্তর করা হবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, এই নিয়ে খুলনা বিভাগে করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট ১১ জনের মৃত্যু হলো। এর মধ্যে রয়েছেন খুলনায় চার জন, বাগেরহাটে দুই জন, নড়াইলে দুই জন, মেহেরপুরে দুই জন ও চুয়াডাঙ্গায় একজন।
করোনার উপসর্গ নিয়ে রাঙ্গামাটিতে বৃদ্ধের মৃত্যু
করোনাভাইরাসের উপসর্গ জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে রাঙ্গামাটিতে ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। আজ শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার ভেদভেদি এলাকায় নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের করোনা বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. মো. মোস্তাফা কামাল আজ বিকেলে দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ওই বৃদ্ধ লোকটি কয়েকদিন ধরে জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। ৩ জুন তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু, এখনো রিপোর্ট আসেনি।
আজ তার মৃত্যুর পর আবার নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, মৃত ব্যক্তির পরিবার ও তার আশেপাশে সব পরিবারকে কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আজ শনিবার পর্যন্ত জেলা থেকে ১২৭০টি নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ১০৫৮টির ফলাফল পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত ৭০ জনের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪১ জন। আর কেউ মারা যায়নি।
পিরোজপুরে করোনা আক্রান্তদের প্রায় অর্ধেক সুস্থ হয়েছেন
পিরোজপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের প্রায় অর্ধেক রোগীই সুস্থ হয়েছেন এবং বাকিরাও সুস্থ হওয়ার পথে বলে জানিয়েছেন পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাসনাত ইউসুফ জাকী।
তিনি আজ শনিবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত পিরোজপুরের সাতটি উপজেলায় ৮৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪২ জন পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন। বাকিরা বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং ভালো আছেন।’
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত বাকিদের সুস্থ ঘোষণা করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন সিভিল সার্জন।
তিনি জানান, এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে নাজিরপুর উপজেলায় এক নারী এবং নেছারাবাদ উপজেলায় এক পুরুষ মারা গেছেন।
এ ছাড়া, পূবালী ব্যাংকের পিরোজপুর শাখার ব্যবস্থাপকসহ চার কর্মকর্তার করোনা শনাক্ত হয়েছে। তবে, পিরোজপুরে যারা আক্রান্ত হয়েছে তাদের অধিকাংশই ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রাম থেকে এ জেলায় এসেছেন বলে জানান সিভিল সার্জন।
জেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলায় রয়েছেন ২৮ জন, ভান্ডারিয়ায় ১৬ জন, মঠবাড়িয়ায় ১৬ জন, ইন্দুরকানি উপজেলায় ১১ জন, নাজিরপুরে সাত জন, নেছারাবাদে সাত জন ও কাউখালী উপজেলায় একজন রয়েছেন।
Comments