ট্রাম্পের বিতর্কিত পোস্ট

সমালোচনার মুখে ফেসবুকে নীতিমালা পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা

ট্রাম্পের বিতর্কিত পোস্টের তীব্র সমালোচনার মুখে নীতিমালা পুনর্মূল্যায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন ফেসবুক প্রধান মার্ক জাকারবার্গ।
মার্ক জাকারবার্গ। ফাইল ফটো

ট্রাম্পের বিতর্কিত পোস্টের তীব্র সমালোচনার মুখে নীতিমালা পুনর্মূল্যায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন ফেসবুক প্রধান মার্ক জাকারবার্গ।  

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগ, ভোটারদের দমন ও পোস্টের বিষয়বস্তু নিয়ে নিজের কর্মীদের সমালোচনার মুখেও পড়েছেন ফেসবুক প্রধান।

কর্মীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক নোটে গত শুক্রবার জাকারবার্গ যুক্তরাষ্ট্রে চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বলেন, ‘পুলিশ বা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর অতিরিক্ত ব্যবহার’, ‘নাগরিক সহিংসতা’ ও ‘মহামারির মধ্যে ভোটগ্রহণের বাস্তবতা’- এর মতো সুক্ষ্ম ও জটিল বিষয়গুলো নিয়ে নীতিমালা পর্যালোচনা করবে ফেসবুক।

গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কয়েকটি পোস্ট নিয়ে টুইটার আপত্তি তোলার পর ফেসবুকের ওপরও চাপ তৈরি হয়। প্রতিষ্ঠানটির কয়েক জন কর্মী ওই পোস্ট সরানোর জন্য জাকারবার্গকে পরামর্শ দেন। কিন্তু সেসময় জাকারবার্গ জানান, ফেসবুকের বর্তমান নীতি রাষ্ট্রীয় বল প্রয়োগ নিয়ে পোস্ট করার বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করে না। কারণ রাষ্ট্রের আইনত সেই ক্ষমতা আছে। শুক্রবার, নীতি পরিবর্তনের ব্যাপারে একটি ‘ভারসাম্যপূর্ণ’ আলোচনার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি জানান, ফেসবুক ‘সমস্যাজনক’ পোস্টের ক্ষেত্রে সেগুলো রেখে দেওয়া বা সরিয়ে না দিয়ে অন্য কী পদ্ধতি গ্রহণ করা যায় তা বিবেচনা করবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানি, আপনারা অনেকেই মনে করেন গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্টের পোস্টগুলোকে আমাদের কোনোভাবে লেবেল করা উচিত ছিল। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। আমি মনে করি, এই ধরনের ব্যবস্থা নিলে পরবর্তীতে নীতিমালা লঙ্ঘন না করলেও আমরা পছন্দ করি না এমন পোস্ট আমাদের মাধ্যমে সম্পাদন কিংবা সরিয়ে নেওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে। তাই আমি মনে করি, এ ব্যাপারে সাবধানে এগুতে হবে।’

তবে, পর্যালোচনা কিংবা পুনর্বিবেচনার কথা বললেও সবগুলো পরিবর্তন নাও আসতে পারে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমরা সব দিক বিবেচনা করছি। কাঠামোগতভাবে আমাদের কিছু পরিবর্তন করতে হবে কি না, সেটি নিয়েই আমরা পর্যালোচনা করতে যাচ্ছি।’

যুক্তরাষ্ট্রে চলমান বিক্ষোভ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। নিজের ফেসবুক ও টুইটারের পোস্ট নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছেন ট্রাম্প। সমালোচকরা বলছেন, বিক্ষোভের মধ্যে ট্রাম্পের বক্তব্য সহিংসতাকে উসকে দিতে পারে। এমনকি ফেসবুক ও টুইটারের নীতিমালার সঙ্গেও পোস্টগুলো সাংঘর্ষিক। এর আগে, নীতিমালা ভঙ্গ করায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টুইটে সর্তকবার্তা জুড়ে দেয় টুইটার।

মিনিয়াপোলিস শহরের সহিংস বিক্ষোভ নিয়ে টুইটে ট্রাম্প জানান, তিনি ‘ন্যাশনাল গার্ড পাঠাবেন, যখন লুটপাট শুরু হবে তখন গুলিও শুরু হবে’ ‘সহিংসতার প্রচারণা’র কথা উল্লেখ করে টুইটারের নিয়ম অনুযায়ী ওই পোস্ট ‘হাইড’ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার জানায়, ট্রাম্পের বক্তব্য নীতিমালা বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও জনস্বার্থ বিবেচনায় সেটিকে সরিয়ে নেওয়া হয়নি। উপরে সর্তকবার্তা দিয়ে ‘হাইড’ করা হয়েছে। তবে, ফেসবুক থেকে পোস্টটি না সরানোয় কিংবা সর্তকবার্তা না দেওয়ায় বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে মার্ক জাকারবার্গ ও তার প্রতিষ্ঠান। এমনকি ফেসবুকের এক কর্মকর্তা এর প্রতিবাদে প্রতিষ্ঠানটি থেকে চাকরি ছেড়েছেন বলেও জানা গেছে।

Comments