জাতিগত বৈষম্যের শিকার হওয়াদের মুখ খোলার আহ্বান আর্চারের
যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের নির্যাতনে নিরস্ত্র জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে জাতিগত বৈষম্যের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের সরব হতে আহ্বান করেছেন ইংল্যান্ডের ফাস্ট বোলার জোফরা আর্চার।
বার্বাডোজে জন্ম নেওয়া বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা রবিবার ব্রিটিশ সংবাদপত্র ডেইলি মেইলে নিজের লেখা কলামে জানিয়েছেন, ‘আমি একজন ব্যক্তি যে কি-না কথা বলার জন্য মুখিয়ে থাকে। বিশেষ করে এমন কিছু নিয়ে যা আপনাকে বিরক্ত করে বা কষ্ট দেয়। আমার ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি হলো, আপনার কখনোই এসব ব্যাপার বোতলবন্দি করে রাখা উচিত নয়। কারণ, বর্ণবাদকে মেনে নেওয়া যায় না।’
গেল ২৫ মে মিনিয়াপোলিস রাজ্যে এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তা অপরাধী সন্দেহে পথ আটকে নির্যাতন চালান কৃষ্ণাঙ্গ ফ্লয়েডের উপর। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, প্রায় নয় মিনিট তার ঘাড়ের ওপর হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে রাখা হয়েছিল। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় ৪৬ বছর বয়সী সাবেক এই বাস্কেটবল খেলোয়াড়ের।
বর্ণ বিদ্বেষের মানসিকতা থেকেই ফ্লয়েডকে ‘হত্যা’ করে হয়েছে জানিয়ে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ করছেন বিক্ষোভ। ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ (কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনেরও মূল্য আছে) নামের একটি ক্যাম্পেইনও চালু হয়েছে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন অঙ্গনের ক্রীড়াবিদরা।
ইংল্যান্ডের হয়ে সাতটি টেস্ট, ১৪টি ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি খেলা ২৫ বছর বয়সী আর্চারের নিজেরও আছে তিক্ত কিছু অভিজ্ঞতা। গেল বছর নভেম্বরে নিউজিল্যান্ড সফরে আউট হয়ে মাঠ ছাড়ার সময় গ্যালারিতে উপস্থিত এক দর্শকের কাছ থেকে বর্ণবাদী মন্তব্য শুনেছিলেন তিনি। এরপর গেল মার্চে তাকে পাঠানো হয়েছিল বর্ণবাদী বার্তাও।
জাতিগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে বরাবরই সোচ্চার আর্চার লিখেছেন, ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার ক্যাম্পেইনটি এতটা জোরালো হয়েছে দেখতে পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত।’
গেল শুক্রবার ইংল্যান্ডের ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের মুহূর্তটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করে আইসিসি। ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘বৈচিত্র্য ছাড়া ক্রিকেট কিছুই নয়, বৈচিত্র্য ছাড়া আপনি পুরো ছবিটা দেখতে পাবেন না।’
ক্রিকেটীয় বৈচিত্র্যের আদর্শ উদাহরণ হিসেবে শুরুর দিকেই আসে বর্তমান ইংল্যান্ড দলের কথা। তাদের অধিনায়ক ওয়েন মরগ্যানের জন্ম আয়ারল্যান্ডে। বিশ্বকাপে দলটির সেরা পারফর্মার ছিলেন নিউজিল্যান্ডের জন্মগ্রহণকারী অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। দুই স্পিনার মইন আলি ও আদিল রশিদ পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। আসরজুড়ে ইংলিশদের দুর্দান্ত শুরু এনে দেওয়া ওপেনার জেসন রয়ের জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকায়।
এই বৈচিত্র্যের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ক্যারিবিয়ান বংশোদ্ভূত আর্চার যোগ করেছেন, ‘আমরা সকলে একই দেশে বাস করি এবং আপনি যদি ইংরেজ হন, তবে অন্য যে কারও মতো আপনারও খেলার অধিকার রয়েছে।’
Comments