যশোরে ‘পুলিশি নির্যাতনে’ কলেজ ছাত্রের কিডনি বিকল

পুলিশের নির্যাতনে যশোরে এক কলেজ ছাত্রের দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্রের অভিযোগ, মাদক ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে পুলিশের বেদম প্রহারে তাকে এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়তে হচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত কলেজছাত্র ইমরান হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশের নির্যাতনে যশোরে এক কলেজ ছাত্রের দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্রের অভিযোগ, মাদক ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে পুলিশের বেদম প্রহারে তাকে এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়তে হচ্ছে।

আহত ইমরান হোসেন যশোর সদর উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের নিকার আলীর ছেলে। তিনি কাজী নজরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সাজিয়ালি পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই সুমারেশ সাহা, এএসআই সাজদার রহমান ও চার কনস্টেবলের বিরুদ্ধে তার অভিযোগ।

ইমরান বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যায় আমি ইজিবাইকে সলুয়া বাজার এলাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। এলাকার এক ছেলে আমার সঙ্গে ছিল। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছানোর পর সাজিয়ালি ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যরা আমাদের গতিরোধ করে সঙ্গের ছেলেটির ব্যাগ তল্লাশি শুরু করে। ভয়ে আমি দৌঁড় দেই। পুলিশ ধাওয়া করে আমাকে ধরে বেধড়ক পেটায় করে। মারের চোটে এক পর্যায়ে জ্ঞান হারাই। পরে স্থানীয় একটি ফার্মেসিতে জ্ঞান ফেরে। পুলিশ আমার পকেটে গাঁজা দিয়ে আটকের কথা বলে। বাবাকে ফোন দিয়ে ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন এক পুলিশ সদস্য। ছয় হাজার টাকা দিয়ে আমাকে ছাড়ানো হয়।’

ইমরানের অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন যশোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ আশরাফ হোসেন।

ইমরানের অবস্থা সম্পর্কে যশোর জেনারেল হাসপাতালের কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. উবায়দুল কাদির উজ্জ্বল জানান, ইমরানের দুটি কিডনির ফাংশন খুবই খারাপ। স্বাভাবিক অবস্থায় ক্রিয়েটেনিন ১ দশমিক ৪ থাকার কথা। কিন্তু তার আছে ৮ দশমিক ৮। আজ এটা আরও বেড়েছে। তার দ্রুত ডায়ালাইসিস শুরু করতে হবে, অবস্থা সংকটাপন্ন।

সাজিয়ালি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মুন্সি আনিচুর রহমান বলেন, ঘটনার দিন সকালে জরুরি কাজে কোতোয়ালি থানায় গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ফিরে জানতে পারি এএসআই সুমারেশ সাহা, এএসআই সাজদার রহমান ও চার কনস্টেবল ওই ছাত্রকে আটক করেছিল। সে অসুস্থ থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

যশোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ আশরাফ হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তা হলো, পুলিশের কাছে তথ্য ছিল ওই এলাকা দিয়ে মাদকদ্রব্য আসবে। সেই অনুযায়ী ওই ছেলে দুটোকে আটক করেছিল পুলিশ। ইমরান দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল। পড়ে গিয়ে সে আঘাত পায়। টাকা লেনদেন বা শারীরিক নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

5h ago