‘অবনতি হয়নি অর্থে উন্নতি হয়েছে’
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার গত চার দিনে আর অবনতি হয়নি। চিকিৎসকদের মতে, যেহেতু অবনতি হয়নি, এটাকে উন্নতি বলা যায়।
আজ মঙ্গলবার গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মহিবুল্লাহ খন্দকার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী চিকিৎসায় আজকে বাংলাদেশের গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার অধ্যাপক ডা. মামুন মুস্তাফি, অধ্যাপক ডা. নজীব ও আমি এবং ইংল্যান্ড ও ভারত থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মিলে একটি ভিডিও কনফারেন্স হয়েছে। ইংল্যান্ড ও ভারত থেকে যোগ দেওয়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বিশ্বব্যাপী পরিচিত এবং তারা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বহু বছরের পুরনো বন্ধু। ভিডিও কনফারেন্সে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অসুস্থতার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেওয়া চিকিৎসার পুরো বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় সবাই একমত হয়েছেন, এখন পর্যন্ত যে প্রক্রিয়ায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চিকিৎসা চলছে, তা পুরোপুরি ঠিক আছে। এই চিকিৎসাই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
‘তবে, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ফুসফুসের সংক্রমণের কোনো উন্নতি হয়নি। সেটি এখনো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থাতেই রয়েছে। সেই কারণে বাংলাদেশের চিকিৎসকরাও বলেছিলেন এবং আজকে কনফারেন্সে ইংল্যান্ড ও ভারতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও বলেছেন, কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীরা যদি উপুড় হয়ে পেটে চাপ দিয়ে ঘুমায়, তাহলে ফুসফুসে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ে, ফুসফুস ভালো থাকে। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকেও এভাবে ঘুমাতে বলা হয়েছে’, বলেন তিনি।
ডা. মহিবুল্লাহ খন্দকার বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শরীরে করোনাভাইরাসের মাত্রা কমে যাওয়াকে ইতিবাচক লক্ষণ হিসেবে দেখেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসরা। বর্তমানে তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সামনের তিন থেকে চার দিন এখনো তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ সময় তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।’
‘তার চিকিৎসার জন্য ইংল্যান্ড ও ভারতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে প্রতিনিয়তই যোগাযোগ হচ্ছে। তাদের সঙ্গে সমন্বয় করেই এখন তার চিকিৎসা চলবে। বর্তমানে বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড ও ভারতের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বিত বোর্ডের মাধ্যমেই তার চিকিৎসা চলছে’, যোগ করেন তিনি।
এর আগে, গত ৪ জুন যখন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কিডনি ডায়ালাইসিস শুরু হয়, সে সময় শারীরিক অবস্থার কারণে ডায়ালাইসিস সম্পন্ন করা যায়নি। যে কারণে তার শারীরিক অবস্থার ‘একটু অবনতি’ হয়। ওইদিন তার শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ ছিল।
৫ জুন সারাদিনই তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছিল। ওই দিন রাতে তৃতীয়বারের মতো তাকে প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তার কিডনি ডায়ালাইসিসও ভালোভাবে সম্পন্ন করা গেছে। ৫ জুনের তুলনায় পরের দিন (৬ জুন) ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভালো ছিল। ওই দিনও তার কিডনি ডায়ালাইসিস করা হয়েছে। ৭ জুন বিকালেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কিডনি ডায়ালাইসিস করা হয়েছে।
একইসঙ্গে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত অ্যান্টিজেন কিট দিয়ে গত ৭ জুন আবারও তার করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সেই পরীক্ষায় দেখা গেছে, তার শরীরে খুব অল্প পরিমাণ করোনাভাইরাসের উপস্থিতি আছে। আগামী ১০ জুন অ্যান্টিজেন কিট দিয়ে আবারও তার করোনা পরীক্ষা করা হবে। ইতোপূর্বে তার অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা হয়েছিল। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, তার শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে অ্যাটিবডি তৈরি হয়েছে।
সর্বশেষ গতকাল বিকালেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কিডনি ডায়ালাইসিস করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার ‘কিছুটা উন্নতি’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা ‘অপরিবর্তিত’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা ‘স্থিতিশীল’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে আবারও প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়েছে
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার ‘একটু অবনতি’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে সার্বক্ষণিক অক্সিজেন দিতে হচ্ছে
‘আমি সুস্থ হয়ে উঠবো, সুস্থ হয়ে উঠতেই হবে’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা পজিটিভ
বিএসএমএমইউর পরীক্ষাতেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা পজিটিভ
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পর শিরীন হক ও বারিশ চৌধুরীও করোনায় আক্রান্ত
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এবারের উদ্যোগ ‘প্লাজমা ব্যাংক’
আমাদেরই সবার আগে এই কিট বিশ্ববাসীর সামনে আনার সুযোগ ছিল: ড. বিজন
Comments