করোনাকালেও জেএসসি’র রেজিস্ট্রেশনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাণিজ্য!

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় জেএসসি শিক্ষার্থীদের অনলাইন রেজিস্ট্রেশনে বোর্ডের নির্ধারিত ফি’র চেয়ে দুই-তিনগুণ বেশি টাকা আদায় করা হচ্ছে। ফলে মহামারি পরিস্থিতিতে আয়-রোজগার কমে যাওয়া দরিদ্র অভিভাবকদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
Moulvibazar
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় জেএসসি শিক্ষার্থীদের অনলাইন রেজিস্ট্রেশনে বোর্ডের নির্ধারিত ফি’র চেয়ে দুই-তিনগুণ বেশি টাকা আদায় করা হচ্ছে। ফলে মহামারি পরিস্থিতিতে আয়-রোজগার কমে যাওয়া দরিদ্র অভিভাবকদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ৭ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত সিলেট শিক্ষাবোর্ডের অধীনস্থ জেএসসি শিক্ষার্থীদের অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। রেজিস্ট্রেশনের জন্য শিক্ষার্থীপ্রতি ফি ৫০ টাকা, ক্রীড়া ফি ৩০ টাকা, রেড ক্রিসেন্ট ফি ১৫ টাকা, অন্ধকল্যাণ ফি ৫ টাকা ও উন্নয়ন ফি ২৫ টাকা হিসাবে মোট ১২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১২৫ টাকা আদায় করার কথা। তবে, কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা করে আদায় করছে। যে কারণে এই মহামারিকালে দরিদ্র অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের জন্য ফি পরিশোধ করাও বাড়তি চাপ বলে মনে করছেন।

আব্দুল মোস্তাকিম, জমশেদ আলীসহ বেশ কয়েকজন অভিভাবক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এসব অনিয়ম কাম্য নয়। করোনাভাইরাসের কারণে পুরো দেশে যেখানে প্রায় অচলাবস্থা বিরাজ করছে, সেখানে নির্ধারিত ফির দুই-তিনগুণ টাকা আদায় করা শিক্ষকদের বাণিজ্য হয়ে পড়েছে।

পতনউষার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফয়েজ আহমদ জানান, তিনি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২৫০ টাকা করে আদায় করছেন। শমশেরনগর হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরে আলম সিদ্দিক জানান, তিনি আদায় করছেন ২৬০ টাকা করে।

এএটিএম বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিহির ধর জানান, তিনি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১৫০ টাকা করে আদায় করছেন। কালী প্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সত্যেন্দ্র কুমার পাল জানান, তিনি ২০০ টাকা করে আদায় করছেন।

এ ছাড়াও, কমলগঞ্জ সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, অভয়চরণ উচ্চ বিদ্যালয়, মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কমলগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ২০০ টাকা; কালেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় ২৫০ টাকা এবং কামুদপুর উচ্চ বিদ্যালয় ৩০০ টাকা আদায় করছেন প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে।

অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান শিক্ষকরা বলেন, অনলাইনের চার্জ, ছবি তোলা, বোর্ডে আসা-যাওয়া, চা-নাস্তা— এসবে বাড়তি টাকা খরচ হয়।

এই বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুন্নাহার পারভীন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে, খোঁজ নিয়ে দেখবো।’

কমলগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন চৌধুরী  দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’

Comments