করোনা আপডেট: চাঁদপুর, মাদারীপুর, পটুয়াখালী, মানিকগঞ্জ, নোয়াখালী, পাবনা

চাঁদপুরে একদিনে সর্বোচ্চ ৭৩ জনের ও মাদারীপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় এক পুলিশ কর্মকর্তা ও দুই ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আরও ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পটুয়াখালীতে অবসরপ্রাপ্ত এক স্কুল শিক্ষকসহ তিন করোনা রোগী ও মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে এক করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, নোয়াখালীতে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া, নোয়াখালীতে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক নারী ও পাবনায় করোনা উপসর্গ নিয়ে এক কৃষক মারা গেছেন। দ্য ডেইলি স্টার স্থানীয় সংবাদদাতারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
Coronavirus-1.jpg
করোনাভাইরাস। ছবি: সংগৃহীত

চাঁদপুরে একদিনে সর্বোচ্চ ৭৩ জনের ও মাদারীপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় এক পুলিশ কর্মকর্তা ও দুই ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আরও ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পটুয়াখালীতে অবসরপ্রাপ্ত এক স্কুল শিক্ষকসহ তিন করোনা রোগী ও মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে এক করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, নোয়াখালীতে  জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া, নোয়াখালীতে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক নারী ও পাবনায় করোনা উপসর্গ নিয়ে এক কৃষক মারা গেছেন। দ্য ডেইলি স্টার স্থানীয় সংবাদদাতারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

চাঁদপুরে একদিনে সর্বোচ্চ ৭৩ জনের করোনা শনাক্ত

চাঁদপুরে একদিনে সর্বোচ্চ ৭৩ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত ৩৬৬ জনের করোনা শনাক্ত হলো।

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত উল্লাহ আজ শুক্রবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘আজ শুক্রবার জেলার ২৭৪ জনের করোনা নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে। এর মধ্যে ৭৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে চার জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন।’

তিনি জানান, এই ৭৩ জনের মধ্যে চাঁদপুর সদরে ২০ জন, হাজীগঞ্জে ১৭ জন, হাইমচরে পাঁচ জন, শাহরাস্তিতে ১১ জন, ফরিদগঞ্জে পাঁচ জন, মতলব দক্ষিণে সাত জন, মতলব উত্তরে তিন জন ও কচুয়ায় পাঁচ জন আছেন। তাদের মধ্যে সদরের ও হাজীগঞ্জের দুজন করে মোট চার জন ইতিমধ্যে মারা গেছেন বলে তিনি জানান।

সিভিল সার্জন বলেন, ‘উপসর্গ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত ৭৪ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ২৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তবে, শনাক্ত হওয়ার পরে মারা যান দুই জন।’

এ দিকে চাঁদপুর সদর হাসপাতাল আইসোলেশনে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া চার ব্যক্তি মারা গেছেন। এ নিয়ে, চাঁদপুর সদর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে ১৭ জন মারা গেছেন বলে জানান হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও করোনা ফোকাল পার্সন ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল।

তবে, তাদের মধ্যে মৃত্যুর পর ১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বাকি ছয় জনের রিপোর্ট এখনো আসেনি বলেও তিনি জানান।

মাদারীপুরে পুলিশ, ব্যাংকারসহ আরও ২৩ জনের করোনা শনাক্ত

মাদারীপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় এক পুলিশ কর্মকর্তা ও দুই ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আরও ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত ২৯৩ জনের করোনা শনাক্ত হলো।

মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মো. সফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩ জনের পজিটিভ রিপোর্ট আমরা পেয়েছি। এদের মধ্যে দুজন করোনা উপসর্গ নিয়ে গত মঙ্গলবার ও বুধবার মারা গেছেন। নতুন আক্রান্তদের হাসপাতালের আইসোলেশন ও হোম আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, নতুন শনাক্তদের মধ্যে সদর উপজেলায় ১২ জন, শিবচরে চার জন ও রাজৈর উপজেলায় সাত জন আছেন। এ পর্যন্ত জেলায় আক্রান্ত ২৯৩ জনের মধ্যে সদর উপজেলায় ৯৬ জন, শিবচর উপজেলায় ৪৮ জন, রাজৈর উপজেলায় ৮৯ জন ও কালকিনি উপজেলায় ৬০ জন আছেন। জেলায় এ পর্যন্ত ১০৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন এবং মারা গেছেন পাঁচ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন ১৮৩ জন।

পটুয়াখালীতে করোনায় ৩ জনের মৃত্যু, মোট মৃত্যু ৭

পটুয়াখালীতে গত ২৪ ঘণ্টায় অবসরপ্রাপ্ত এক স্কুল শিক্ষকসহ তিন করোনা রোগী মারা গেছেন। এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত সাত জন করোনা রোগী মারা গেলেন।

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার ও বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা আজ এ সব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এ দিকে, জেলার বাউফলের এক নারী করোনা পজিটিভ হয়ে বরিশাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে মারা গেছেন। গত ৯ জুন তিনি বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তার নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়।

আজ শুক্রবার তাকে নিজ পারিবারিক কবরস্থানে কোভিড প্রটোকলে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।

জেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত ১২৫ জন করোনা রোগীর মধ্যে সাত জন মারা গেছেন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩২ জন।

মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে করোনা রোগীর মৃত্যু

মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে করোনা আক্রান্ত এক ব্যক্তি মারা গেছেন। আজ সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি মারা যান।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরশ্বাদ উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘মৃত ব্যক্তি কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। চাকুরী সূত্রে তিনি মানিকগঞ্জে পরিবার নিয়ে থাকতেন। করোনা উপসর্গ থাকায় গত ৪ জুন তিনি জেলা হাসপাতালে আসেন। পরে তার নমুনা সংগ্রহ করে, পরীক্ষার জন্য ওই দিনই পাঠানো হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ৭ জুন সকালে তার রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসে। ওই দিন বিকেলেই তিনি হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হন। কিন্তু, আজ বিকেল ৫টার দিকে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে, তাকে দ্রুত ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা হয়। মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতাল থেকে সিংগাইর সড়ক হয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে সিংগাইর বাস স্ট্যান্ড এলাকায় সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি মারা যান।’

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত জেলার মোট চার হাজার ১০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। এর মধ্যে তিন হাজার ৭১৬ টির রিপোর্ট পাওয়া গেছে। করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩৮৭ জনের। আক্রান্তদের মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৩২ জন এবং নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন ২৪৮ জন। এ,ছাড়া সুস্থ হয়েছেন ১০৪ জন এবং মারা গেছেন চার জন।

নোয়াখালীতে মৃত ব্যক্তির করোনা শনাক্ত, উপসর্গ নিয়ে নারীর মৃত্যু

নোয়াখালী বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌর এলাকায় জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টে মারা যাওয়া ৩৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়েছে। বেগমগঞ্জের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অসীম কুমার দাস আজ বিকেলে দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, চৌমহনী পৌরসভার করিমপুর মহল্লার বাসিন্দা ছিলেন ওই ব্যক্তি। করোনার উপসর্গ নিয়ে গত ৯ জুন নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। মারা যাওয়ার আগের দিন তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আজ দুপুরে আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ ল্যাব থেকে আসা নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে তার করোনা শনাক্ত হয়। মৃত ব্যক্তি চৌমহনী বাজারে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন।

এ নিয়ে বেগমগঞ্জে করোনা আক্রান্ত হয়ে ২০ জন মারা গেছেন বলে জানান ডা. অসীম।

এ দিকে, নোয়াখালীর চাটখিলে করোনার উপসর্গ জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে এক নারী মারা গেছেন।

আজ শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের দেলিয়াই এলাকায় নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টিম করোনা পরীক্ষার জন্য মৃত নারীর নমুনা সংগ্রহ করে।

চাটখিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা ফোকাল পার্সন ডা. মো. তামজিদ হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, আজ দুপুরে মারা যাওয়া নারী দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, অ্যাজমা ও জ্বরে ভুগছিলেন।

পাবনায় করোনা উপসর্গ নিয়ে কৃষকের মৃত্যু

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে পেশায় কৃষক ওই ব্যক্তি ভাঙ্গুড়া পৌর এলাকায় নিজ বাড়িতে মারা যান।

ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হালিমা খানম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই ব্যক্তি কয়েকদিন ধরে সর্দিকাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভাঙ্গুড়া পৌর এলাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে যান। সেখানে তার এক্সরে সহ অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। করোনা উপসর্গ থাকায়, চিকিৎসক তাকে পাবনা সদর হাসপাতালে যেতে বলেন। কিন্তু, তিন সদর হাসপাতালে না গিয়ে বাড়িতে চলে যান। পরে রাত সাড়ে দশটার দিকে তিনি মারা যান।

করোনা পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাকে দাফন করা হয় বলেও জানান ডা. হালিমা।

Comments

The Daily Star  | English

Onions sting

Prices of onion increased by Tk 100 or more per kg overnight as traders began stockpiling following the news that India had extended a virtual restriction on its export.

3h ago