স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

কুয়েতের সরকারি ২ কর্মকর্তাকে ২১ লাখ দিনার দেন এমপি শহিদ

লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহীদ ইসলাম। তিনি কাজী পাপুল নামেও পরিচিত। ছবি: সংগৃহীত

মানবপাচার ও অর্থপাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল  দেশটির সরকারি দুই কর্মকর্তাকে ২১ লাখ দিনার (প্রায় ৫৮ কোটি টাকা) দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

গাল্ফ নিউজের এক প্রতিবেদনে আজ মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউটরের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে শহিদ জানান, কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তাকে ২১ লাখ কুয়েতি দিনার (বাংলাদেশি ৫৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা) দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে এক কর্মকর্তাকে ১১ লাখ কুয়েতি দিনার চেক হিসেবে এবং আরেক কর্মকর্তাকে ১০ লাখ কুয়েতি দিনার নগদ দেন এমপি শহিদ। তিনি ওই চেকের একটি অনুলিপি পাবলিক প্রসিকিউশনকে জমা দিয়েছেন।

তৃতীয় আরও এক ব্যক্তিকে অর্থের ‘ব্যাগ’ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলেও  সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে কুয়েতের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম আল রাই।

আল রাইয়ে বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয়ের এক পরিচালক, সরকারি এক কর্মকর্তা এবং আরও এক সহযোগী এই অর্থ পেয়েছেন।

অর্থের বিনিময়ে বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে নিয়ে যাওয়া ১২ জন শ্রমিক শহিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

সূত্রের বরাতে কুয়েতের সংবাদমাধ্যম আল রাই জানায়, গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কুয়েতের মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সম্পর্কে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তিনি জানান, ওই কর্মকর্তা তার ক্লিনিং কোম্পানিতে আসার আগে সব কুয়েতি কর্মচারিকে ছুটিতে পাঠানো হতো যাতে করে তাকে কেউ চিনতে না পারে।

সূত্র জানায়, ‘বাংলাদেশি এমপির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, কুয়েতি ওই ম্যানেজার ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত থেকে নগদ অর্থ লেনদেনের জন্য জোর দিতেন। বেশ কয়েকবার ওই ম্যানেজার ক্লিনিং কোম্পানিতে আসার আগে শহিদ কুয়েতি কর্মচারীদের ছুটি দিয়েছেন।’

আল রাইয়ের বরাতে গাল্ফ নিউজ জানায়, ‘অভিযুক্ত বাংলাদেশি এমপি স্বীকার করেছেন, বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আনতে এক কর্মকর্তাকে তিনি নগদ ১০ লাখ কুয়েতি দিনার দিয়েছেন।’

পাশাপাশি, তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে তার ব্যবসায়ের সুবিধার্থে মোটা অঙ্কের নগদ অর্থ দিয়েছেন বলেও স্বীকার করেছেন।

সূত্র জানায়, ‘বাংলাদেশি এমপি বলেছিলেন যে, তিনি একবার ওই কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। এরপর একজনের মধ্যস্থতায় লেনদেন চূড়ান্ত করা হয়েছিল।’

বাংলাদেশ থেকে যাওয়া বেশ কয়েকজন শ্রমিকের সাক্ষ্য অনুযায়ী, তারা কুয়েতে আসার বিনিময়ে তারা প্রত্যেকেই তিন হাজার দিনার (৮ লাখ ২৮ হাজার টাকা) পর্যন্ত দিয়েছেন। একই সাথে প্রতিবছর ভিসা নবায়নের জন্যও তাকে অর্থ দিতে হতো।

মানবপাচার ও অর্থ পাচারের অভিযোগে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম গত ৬ জুন কুয়েতে গ্রেপ্তার হন।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago