কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ১০ শয্যার আইসিইউ ও এইচডিইউ চালু হচ্ছে শনিবার
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে আগামী শনিবার থেকে চালু হচ্ছে ১০ শয্যার আইসিইউ ও ১০ শয্যার এইচডিইউ।
এ তথ্য নিশ্চিত করে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শাহীন মো. আবদুর রহমান বলেন, এই আইসিইউ এবং এইচডিইউ জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের আর্থিক সহযোগিতায় স্থাপন করা হয়েছে। পরিচালনায় যারা থাকছেন তাদের বেতনসহ অন্যান্য সুবিধাও ইউএনএইচসিআর দেবে।
তিনি বলেন, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে বর্তমানে জনবল সংকট চরমে। ধার-কর্জে কর্মী নিয়োগ করে হাসপাতালের কার্যক্রম সচল রাখা হয়েছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির অধিকাংশ কর্মচারীর পদ শূন্য রয়েছে অনেকদিন থেকেই।
এদিকে, আগামীকাল শুক্রবার থেকে কক্সবাজার জেলা শহরের সাগর তীরে হোটেল সি প্রিন্সেসে চালু হচ্ছে ২০০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার।
জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এ আইসোলেশন সেন্টারটি পরিচালনার জন্য কয়েকটি এনজিওকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান।
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যায় কক্সবাজার জেলা চর্তুথ স্থানে রয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জের পরেই কক্সবাজার।
কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যে, গতকাল (১৭ জুন) পর্যন্ত ককসবাজার জেলার রামু, উখিয়া ও চকরিয়ায় চালু করা কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে রোগী ভর্তি ছিল ১২০ জন। এ ছাড়া কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে করোনা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন আছেন ১০ জন রোগী।
জেলায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৬৯ জন। তার মধ্যে ৩৯ জন রোহিঙ্গা। এ পর্যন্ত তিন জন রোহিঙ্গাসহ জেলায় করোনায় মারা গেছে ২৯ জন।
করোনার হটস্পট হিসাবে পরিচিতি পাওয়া কক্সবাজার সদর উপজেলায় জেলা শহরসহ গতকাল পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৮২৩ জন। এ ছাড়া চকরিয়ায় ২৬৯ জন, উখিয়ায় ২১৫ জন, টেকনাফে ১৪৫ জন, রামুতে ১২৩ জন, মহেশখালীতে ৬৪ জন, পেকুয়ায় ৭৯ জন ও কুতুবদিয়া উপজেলায় ১০ জন।
বর্তমানে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ শয্যা, চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ শয্যা ও উখিয়ায় ১৪৪ শয্যার কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল চালু রয়েছে। হাসপাতালগুলোতে কোভিড আক্রান্ত রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা সিলিন্ডার অক্সিজেন। এখানে আইসিইউ বা ভেন্টিলেটরের ব্যবস্হা নেই। বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত সংকটাপন্ন রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অনেকেই নিজ উদ্যোগে চিকিৎসার জন্য ছুটছেন রাজধানী ঢাকায়।
এক যুগ আগে কক্সবাজারে সরকারিভাবে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা হলেও ৯ বছর ধরে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করেন জেলা সদর হাসপাতালের একটি ভবনে। এটিই ছিল মেডিকেল কলেজের অস্হায়ী ক্যাম্পাস। তিন বছর আগে কক্সবাজার শহরতলীর লারপাড়া এলাকায় কলেজটি মূল নিজস্ব ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হয়। কিন্তু এখনও প্রস্তাবিত ৫০০ শয্যার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মিত হয়নি। জেলা সদর হাসপাতালে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক শিক্ষা গ্রহণ করছে।
কক্সবাজার সিভিল সোসাইটি ফোরামের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, মেডিকেল কলেজের সাথে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এখানে প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমান করোনা সংকটে এ হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়েছে। কক্সবাজারকে দেশে প্রথম রেডজোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তবে অনেকেই রেডজোনের লকডাউন না মানায় দিন দিন পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
Comments