বিলবাওকে হারিয়ে ফের শীর্ষে বার্সেলোনা

বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী তখন তারিখটা ২৪ জুন। বার্সেলোনার ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসির জন্মদিন। এমন দিনে সমর্থকরা অপেক্ষায় ছিলেন তার ৭০০তম গোলে জয়কে রাঙিয়ে রাখতে। কিন্তু হয়নি তা। অপেক্ষা বেড়েছে মেসির। তবে পুরো ম্যাচে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে দলকে জয় এনে দিয়েছেন বার্সা অধিনায়ক। তার জাদুতেই অ্যাতলেতিক বিলবাওকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
ছবি: এএফপি

বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী তখন তারিখটা ২৪ জুন। বার্সেলোনার ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসির জন্মদিন। এমন দিনে সমর্থকরা অপেক্ষায় ছিলেন তার ৭০০তম গোলে জয়কে রাঙিয়ে রাখতে। কিন্তু হয়নি তা। অপেক্ষা বেড়েছে মেসির। তবে পুরো ম্যাচে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে দলকে জয় এনে দিয়েছেন বার্সা অধিনায়ক। তার জাদুতেই অ্যাতলেতিক বিলবাওকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

এর আগের তিনটি ম্যাচে বিলবাও বিপক্ষে গোলই পায়নি বার্সেলোনা। চলতি মৌসুমে তো দুটি ম্যাচ হেরেও যায় তারা। এদিনও এমন শঙ্কাই জেগেছিল। তবে দ্বিতীয়ার্ধের গোছানো ফুটবলে ডেড লক ভাঙতে পারে তারা। বদলী খেলোয়াড় ইভান রাকিতিচে রক্ষা পায় দলটি।

আর জয়ে আপাতত শীর্ষে উঠেছে বার্সেলোনা। ৩১ ম্যাচে ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে রিয়ালের সঙ্গে আবার তিন পয়েন্টের ব্যবধান গড়েছে তারা। তবে মায়োর্কার বিপক্ষে বুধবার জিতলেই ফের শীর্ষে ফিরবে রিয়াল মাদ্রিদ। ৩০ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ৬৫ পয়েন্ট।

ঘরের মাঠে ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই পিছিয়ে পড়তে পারতো বার্সেলোনা। সে যাত্রা দলকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রেস টের স্টেগেন। উনাই লোপেজের নেওয়া ফ্রিকিক ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন তিনি। পরের মিনিটে সুযোগ ছিল বার্সারও। জর্দি আলবার কাটব্যাকে গোলমুখে বল নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে গোল পেতে পারতেন সুয়ারেজ। তবে ফিরতি বলে ভালো শট নিয়েছিলেন সের্জিও বুসকেতস। কিন্তু গোললাইনের সামান্য সামনে থেকে হেড করে কোনো বিপদ হতে দেননি ইয়েরি আলভারেজ।

দশম মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম শট নেন মেসি। তবে তার দুর্বল শট ধরতে কোনো সমস্যা হয়নি বিলবাও গোলরক্ষক উনাই সিমোনের। তিন মিনিট পর পাল্টা আক্রমণে দারুণ সুযোগ ছিল বিলবাওর। নিজেদের অর্ধ থেকে বাড়ানো বলে বাঁ প্রান্তে ফাঁকায় পেয়েছিলেন উইলিয়ামস। কিন্তু লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। তার শট পাশের জাল কাঁপায়।

১৫তম মিনিটে গ্রিজমানের অসাধারণ ডামিতে ফাঁকায় বল পেয়ে যান সুয়ারেজ। কিন্তু জোরালো শট নিতে পারেননি। যা ধরতে কোনো বেগ পেতে হয়নি সিমোনের। পরের মিনিটে মেসির পাস থেকে ডান প্রান্তে আবারো ফাঁকায় বল পেয়ে যান সুয়ারেজ। কিন্তু এবার লক্ষ্যেই শট নিতে পারেননি এ উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড। ২১তম মিনিটে দারুণ সুযোগ বিলবাও। ফ্রিকিক থেকে ফাঁকায় হেড নেওয়ার সুযোগ পেয়েও লক্ষ্যে রাখতে ব্যর্থ হন আলভারেজ।

তিন মিনিট পর ইনিগো লেকুয়ের একক দক্ষতায় ভালো সুযোগ তৈরি হয়েছিল। পিকেকে কাটিয়ে ছোট ডি-বক্সে ফাঁকায় দাঁড়ানো সতীর্থকে পাস দিয়েছিলেন তিনি। তবে পেছন থেকে দারুণ এক ট্যাকেলে সের্জিও বুসকেতস সে বল ঠেকালে কোনো বিপদ হয়নি স্বাগতিকদের। উল্টো পাল্টা আক্রমণ থেকে গোল পেতে পারতো তারা। মেসির বাড়ানো বলে ধরে ভিদালকে কাটব্যাক করেছিলেন সুয়ারেজ। তবে অল্পের জন্য চিলির এ মিডফিল্ডার ধরতে না পারায় নষ্ট হয় সে সুযোগ।

এরপর প্রথমার্ধের বাকি সময়ে মাঝমাঠে বল ঘোরাঘুরি করেছে বেশি। অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়েই খেই হারিয়ে ফেলেন ফরোয়ার্ডরা। ফলে গোলশূন্য ভাবে বিরতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধের নবম মিনিটে মেসির বাড়ানো বলে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন গ্রিজমান। কিন্তু গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে সে সুযোগ নষ্ট করেন তিনি। ৬২তম মিনিটে মেসির ফ্রিকিক থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন ভিদাল। কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি।

দুই মিনিট পর গ্রিজমান ও বুসকেতসের জায়গায় বদলী খেলোয়াড় হিসেবে আনসু ফাতি ও রাকিতিচকে নামান বার্সা কোচ কিকে সেতিয়েন। তাতে বার্সেলোনার আক্রমণের ধার বাড়ে। প্রথম সুযোগেই গোল পেতে পারতেন ফাতি। সুয়ারেজের বাড়ানো বলে ফাঁকায় হেড দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় তার হেড।

৭১তম মেসির ক্রস থেকে একেবারে ফাঁকায় হেড নিয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ভিদাল। তবে ফিরতি বলে জটলা থেকে রাকিতিচকে দারুণ এক পাস দেন মেসি। একেবারে অরক্ষিত অবস্থায় বল পেয়ে যান এ ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার। জোরালো এক শটে বল জালে জড়ালে স্বস্তি ফিরে আসে বার্সা শিবিরে। গত মৌসুমে এল ক্লাসিকোতে গোল দেওয়ার পর এটাই রাকিতিচের প্রথম গোল। আর বার্সেলোনার জার্সি গায়ে এটা মেসির ২৫০তম এসিস্ট।

৭৪তম মিনিটে মেসির পাস থেকে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দারুণ এক শট নিয়েছিলেন সুয়ারেজ। তবে এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে কর্নার হলে ব্যবধান বাড়েনি। পাঁচ মিনিট পর নেলসন সেমেদোর বাড়ানো বল ধরে তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে অসাধারণ এক শট নিয়েছিলেন মেসি। কিন্তু অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি তার শট। ৮৪তম মিনিটে গোল শোধ করার সুযোগ ছিল বিলবাওর। ফ্রিকিক থেকে একেবারে ফাঁকায় হেড দেওয়ার হাতছাড়া করেন বদলী খেলোয়াড় রাউল গার্সিয়া। উল্টো বল হাতে লাগালে ফ্রিকিক পায় বার্সা।

চার মিনিট পর দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে মেসিকে দারুণ এক পাস দিয়েছিলেন ফাতি। বল পেয়ে ভালো শটও নিয়েছিলেন বার্সা অধিনায়ক। তবে এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বাইরে গেলে নষ্ট হয় সে সুযোগ। ম্যাচের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ফ্রিকিক থেকে উনাই নুনেজের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যে না থাকায় সমতায় ফিরতে পারেনি বিলবাও।

ম্যাচের যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে দুর্দান্ত এক সেভ করেন বিলবাও গোলরক্ষক সিমোন। আলবার কাটব্যাক থেকে ভিদালের নেওয়া জোরালো শট ফিরিয়ে দেন তিনি। ছোট ডি-বক্সে ফিরতি বল পেয়ে গিয়েছিলেন ফাতি। তার নেওয়া শট গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন এক ডিফেন্ডার। ফলে ব্যবধান বাড়েনি। তবে ১-০ গোলের স্বস্তির জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে পেরেছে স্বাগতিকরা।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago