৫-১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হতে পারতাম: সাকিব
ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েও তা গোপন করায় আইসিসির নিষেধাজ্ঞা পাওয়া সাকিব আল হাসানের আরও বড় শাস্তি হতে পারত। তবে সংস্থাটির দুর্নীতি দমন বিভাগের কর্তাদের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর সবকিছু বিস্তারিত তুলে ধরাতেই পাঁচ-দশ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছেন বলে মনে করছেন তিনি।
গেল অক্টোবরে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয় বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার সাকিবকে। যার মধ্যে এক বছরের শাস্তি স্থগিত। প্রথম বছরের মধ্যে নতুন করে কোনো অপরাধ না করলে আগামী ২৯ অক্টোবর থেকে আবার ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন তিনি।
তিনবার জুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তাব পেলেও আইসিসিকে না জানানোয় সাকিবের শাস্তি হওয়ার পর থেকে প্রশ্ন উঠেছে অনেকবার। তার মতো একজন অভিজ্ঞ তারকা এত বড় ভুল কীভাবে করলেন? বুধবার ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজে ভারতীয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সাকিব জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টাকে খুবই হালকাভাবে নিয়েছিলেন তিনি।
‘আমার মনে হয়, যা ঘটেছিল (জুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তাব পাওয়া) আমি সেটাকে খুব হালকাভাবে নিয়েছিলাম। অবশ্যই, এই প্ল্যাটফর্মে আমি বিস্তারিত আলোচনা করতে চাই না। আমি যখন দুর্নীতি দমন কর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছিলাম এবং তাদেরকে বললাম, তারা সবকিছুই জানত। তাদেরকে সব ধরনের প্রমাণ দিয়েছিলাম। তারা ভেতরে-বাইরে ঠিক কী কী ঘটেছিল, তার সবকিছু জানত। সত্যি কথা বলতে, কেবল এই কারণেই আমি এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছি। নইলে আমি পাঁচ থেকে দশ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হতে পারতাম।’
‘আমি মনে করি, খুবই বোকার মতো ভুল করেছি। আমার যে অভিজ্ঞতা, যে পরিমাণ আন্তর্জাতিক ম্যাচ আমি খেলেছি এবং আইসিসির দুর্নীতি দমন বিষয়ে যতগুলো ক্লাস করেছি, আমার ওই সিদ্ধান্ত (আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগ না জানানো) নেওয়া উচিত হয়নি। সেটা নিয়ে আমি অনুতপ্ত। আমি মনে করি, কারোরই ওই ধরনের মেসেজ বা ফোন-কল হালকাভাবে নেওয়া উচিত না কিংবা এড়িয়ে যাওয়া উচিত না।’
বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা ক্রিকেটার দাবি করেছেন, দৈনন্দিন জীবনে বহু মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ হয় বলে জুয়াড়ির সঙ্গে কথোপকথনের বিষয়টি তার স্মৃতি থেকে মুছে গিয়েছিল। তবে নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার পর ভুল বুঝতে পেরেছেন তিনি। এই ঘটনা থেকে গ্রহণ করেছেন শিক্ষা।
‘আমরা হাজার হাজার ফোনকল, মেসেজ পাই। আমাদের আর কয়টা মনে থাকে! একটা উদাহরণ আমি দিতে পারি। ওই লোকটি যখন শেষবার আমাকে মেসেজ পাঠিয়েছিল, আমি জবাব দিয়েছিলাম, “দুঃখিত, কার সঙ্গে কথা বলছি?” তার মানে, আমার মনেও ছিল না যে, কার সঙ্গে কথা বলছি। তার সঙ্গে আমার দুই-তিন বছর আগে কথা হয়েছিল। সেসময় আমি জানতামও না লোকটা কে, তার নম্বরও আমার কাছে ছিল না। যাই হোক, তারা যখন (আইসিসি দুর্নীতি দমন বিভাগ) তদন্ত করেছে, তখন তারা এসব জানত এবং তারা পরবর্তীতে পরিস্থিতিটি বুঝতে পেরেছে।’
‘তবে সত্যি বলতে, কারোই উচিত নয় এসব হালকাভাবে নেওয়া কিংবা ফেলে রাখা। নিরাপদে থাকার জন্য অবশ্যই দুর্নীতি দমন কর্তাদের জানানো উচিত। এই শিক্ষা আমি পেয়েছি। এটি আমার জন্য বড় শিক্ষা।’
Comments