করোনা আপডেট: ফেনী, ফরিদপুর, চাঁদপুর, খুলনা, পিরোজপুর

গত ২৪ ঘণ্টায় ফেনী জেলায় আরও ৭৮ জনের ও ফরিদপুরে নতুন করে ৬১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চাঁদপুরে নতুন শনাক্ত হওয়া করোনা রোগীর সংখ্যা ১৭। তবে, গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় করোনা উপসর্গ নিয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও, পিরোজপুরে নতুন করে ১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং এ জেলায় করোনা আক্রান্ত দেড় শতাধিক রোগীর দুই তৃতীয়াংশ সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ফেনী জেলায় আরও ৭৮ জনের ও ফরিদপুরে নতুন করে ৬১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চাঁদপুরে নতুন শনাক্ত হওয়া করোনা রোগীর সংখ্যা ১৭। তবে, গত ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় করোনা উপসর্গ নিয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও, পিরোজপুরে নতুন করে ১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং এ জেলায় করোনা আক্রান্ত দেড় শতাধিক রোগীর দুই তৃতীয়াংশ সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার দ্য ডেইলি স্টারের স্থানীয় সংবাদদাতারা এ তথ্য জানান।

ফেনীতে আরও ৭৮ জনের করোনা শনাক্ত

ফেনীতে নতুন করে আরও ৭৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৭৪৯ জনে। এরমধ্যে ১৫ জন মারা গেছেন। সুস্থ হয়েছেন ২৭৪ জন।

ফেনীর ভারপ্রাপ্ত সিভিল এসএম মাসুদ রানা আজ দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

নতুন আক্রান্ত ৭৮ জনের মধ্যে ফেনী সদর উপজেলার ৩১ জন, দাগনভূঁঞা উপজেলায় এক চিকিৎসক ও চার পুলিশসহ ২০ জন, সোনাগাজী উপজেলায় তিন পুলিশসহ ১২ জন, ছাগলনাইয়া উপজেলায় একজন স্বাস্থ্যকর্মীসহ ১০ জন, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় দুই জন করে এবং চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানার দুই জন আছেন।

জেলায় ৭৪৯ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে ফেনী সদর উপজেলায় ২৯১ জন, দাগনভূঁঞায় ১৫৯ জন, ছাগলনাইয়ায় ১০০ জন, সোনাগাজীতে ১১৭ জন, পরশুরাম ৩৩ ও ফুলগাজীতে ৩৭ জন। পাশের চট্টগ্রাম, মিরসরাই, চৌদ্দগ্রাম ও সেনবাগের ১২ জন।

গত দুই মাসে জেলায় ৪ হাজার ৬৫২ জনের সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রামের ফৌজদার হাট বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি), চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় এবং নোয়াখালী আবদুল মালেক মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। গতকাল পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৬১ জনের নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেছে।

ফরিদপুরে আরও ৬১ জনের করোনা শনাক্ত

ফরিদপুরে ১২ পুলিশ ও এক নার্সসহ আরও ৬১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে ফরিদপুরে করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১ হাজার ৪৬৮ জন।

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মো. ছিদ্দীকুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ফরিদপুরে নতুন করে যে ৬১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে তার মধ্যে ফরিদপুর সদর উপজেলায় ৩১, বোয়ালমারী উপজেলায় ১২, সদরপুর উপজেলায় সাত, নগরকান্দা ও ভাঙ্গা উপজেলায় চার জন করে এবং সালথা, মধুখালী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলায় এক জন করে আছেন।

এ পর্যন্ত ফরিদপুরে মোট শনাক্ত ১ হাজার ৪৬৮ জন জনের মধ্যে ফরিদপুর সদরে ৫৩৩ জন, ভাঙ্গায় ২৮৭ জন, বোয়ালমারীতে ২১৯ জন, সদরপুরে ১০২ জন, নগরকান্দায় ৯৩ জন, চরভদ্রাসন ৭৯, সালথায় ৫৮ জন, আলফাডাঙ্গায় ৫৩ জন এবং মধুখালীর ৪৪ জন আছেন।

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মো. ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, ‘ফরিদপুরে নতুন করে ১২ পুলিশ সদস্য ও এক সেবিকাসহ আরও ৬১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ জেলায় করোনা ভাইরাসজনিত কোভিট-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে পাঁচ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ মোট ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি ইতিমধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া ২০৬ জন সুস্থ হয়েছেন। বাকিরা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল, ফরিদপুর পুলিশ লাইন্স হাসপাতাল, পুলিশ ব্যারাক ও নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’

চাঁদপুরে আরও ১৭ জনের করোনা শনাক্ত

চাঁদপুরে নতুন করে আরও ১৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চাঁদপুর সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত উল্লাহ এটি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘আজ সকালে ১৫১ টি রিপোর্ট আসে। এর মধ্যে ১৭টি পজিটিভ। বাকিগুলো নেগেটিভ। নতুন ১৭ জনের মধ্যে চাঁদপুর সদরে চার জন, শাহরাস্তিতে দুই জন, হাইমচরে চার জন, মতলব উত্তরে তিন জন,কচুয়ায় একজন, ফরিদগঞ্জে দুই জন এবং হাজীগঞ্জে একজন।

চাঁদপুর জেলায় এ নিয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৬৯ জনে। তবে এর মধ্যে করোনায় চাঁদপুর মৃতের সংখ্যা ৪৯ জন। উপজেলা ভিত্তিক আক্রান্ত চাঁদপুর সদরে ২৬৯ জন,  শাহরাস্তিতে ৮৭ জন, হাজীগঞ্জে ৬৭ জন, ফরিদগঞ্জে ৬৫ জন, হাইমচরে ৪০ জন, কচুয়ায় ৩০ জন, মতলব দক্ষিণে ৭৪ জন ও মতলব উত্তরে ৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

খুলনায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ৩ জনের মৃত্যু

করোনা উপসর্গ নিয়ে খুলনায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রাত একটার দিকে, রাত দেড়টার দিকে এবং ভোর আজ ভোর চারটার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ফ্লু কর্নারে তারা মারা যান।

আজ খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ফ্লু কর্নারের ফোকাল পার্সন (আরএমও) ডা. মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তদের একজন খুলনা মহানগরীর খালিশপুরের বয়রার বাসিন্দা। তিনি জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে রাত ১২টা ০৫ মিনিটে মিনিটে করোনা সন্দেহে হাসপাতালের ফ্লু কর্নারে ভর্তি হন। এর ঘণ্টা খানেক পরে তার মৃত্যু হয়। আরেকজন হলেন খুলনা সদরের বাগমারা এলাকার বাসিন্দা। গত ২৪ জুন বিকালে তিনি খুমেকের কারোনা সন্দেহ ওয়ার্ডে ভর্তি হন। রাত দেড়টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তারও শ্বাসকষ্ট, জ্বর, গলাব্যথাসহ নানা উপসর্গ ছিল। অপরজন হলেন খুলনার হরিনটানা থানার রায়েরমহল এলাকার বাসিন্দা। তিনি জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে গত ২৩ তারিখ বিকালে ২টা ১০ মিনিটে করোনা সন্দেহে হাসপাতালের ফ্লু কর্নারে ভর্তি হন। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে রেফার্ড করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোর চারটার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।’

খুলনা জেলায় গতকাল পর্য়ন্ত করোনা পজিটিভ রোগী ছিল ১ হাজার ৩২২ জন। এর মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ১৮ জন। আর করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন এই তিন জনসহ ৬৮ জন।

পিরোজপুরে দেড় শতাধিক রোগীর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন প্রায় দুই তৃতীয়াংশ

পিরোজপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দেড় শতাধিক রোগীর মধ্য থেকে সুস্থ হয়েছেন প্রায় দুই তৃতীয়াংশ। পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাসনাত ইউসুফ জাকী এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘বুধবার রাতে চারটি উপজেলায় নতুন করে ১০ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায় জেলায় মোট আক্রান্তদের সংখ্যা ১৬৫ জনে পৌঁছেছে। জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রোগীর বাড়ি পিরোজপুর সদর, মঠবাড়িয়া ও ভান্ডারিয়া উপজেলায়। এ পর্যন্ত সদর উপজেলায় ৪০ জন, মঠবাড়িয়ায় ৪৬ জন, ভান্ডারিয়ায় ৩৭ জন, নেছারাবাদে ১৪ জন, ইন্দুরকানীতে ১৩ জন, নাজিরপুরে ১২ জন এবং কাউখালীতে ৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তবে, এদের মধ্য থেকে ৯৩ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন।’

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলায় ৩ জন মারা গেছেন। এছাড়া, করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন কমপক্ষে আরও ১৫ জন। এদের অধিকাংশের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হলেও, এখনও সকলের প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

সিভিল সার্জন জানান, নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানোর পর প্রতিবেদন পেতে দেরি হওয়ায় তারা সমস্যায় পড়ছেন। অনেক সময় করোনা আক্রান্তের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের কোভিড- ১৯ নেগেটিভ হয়। আর ফলাফল পেতে দেরি হওয়া, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।

তবে, দ্রুত কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফল পেলে স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য কাজ করা আরও সহজ হতো বলে জানান তিনি।

পিরোজপুর থেকে এ পর্যন্ত দুই হাজার ১৩০ জন ব্যক্তি নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হলেও এখনো ৮৫১ টি নমুনার রিপোর্ট পায়নি (পেন্ডিং আছে) স্বাস্থ্য বিভাগ।

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago