চট্টগ্রাম বন্দরে টাকার বিনিময়ে জাল নিয়োগপত্র, প্রতারক চক্রের ৫ জন গ্রেপ্তার

বন্দর কর্মচারীরা জড়িত, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য
চট্টগ্রাম বন্দরে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে পাঁচ জনকে গতকাল বুধবার আটক করেছে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বন্দরে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে সংঘবদ্ধ চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডবলমুরিং থানা পুলিশ। গতকাল বুধবার বিকালে নগরীর আগ্রাবাদ এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় উদ্ধার করা হয় প্রতারণার শিকার সোহেল মিয়াকে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের রেজাউল করিম (৪৪), সিরাজগঞ্জ সদরের জহুরুল ইসলাম (৩৭), মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের আব্দুস সহিদ (২৯) এবং আরও দুই সহযোগী।  

ডবলমুরিং থানার উপপুলিশ পরিদর্শক অর্ণব বড়ুয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন ‘আগ্রাবাদ এলাকার আবাসিক “হোটেল দুবাই”থেকে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও ভিক্টিমকে উদ্ধার করা হয়।’

তিনি জানান, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি, এই চক্রের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের এক শ্রেণির অসাধু কর্মচারী সরাসরি জড়িত।’

পুলিশ জানায়, পঞ্চগড় সদর এলাকার সোহেল মিয়া চাকরি খুঁজতে গিয়ে প্রতারকদের খপ্পরে পড়েন। প্রতারক চক্রের সদস্যরা জানায়, টাকা দিলে চট্টগ্রাম বন্দরে চাকরি পাবে। সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে তাদের সাথে চুক্তি হয় চট্টগ্রাম বন্দরের ‘অফিস সহায়ক’ পদের জন্য। চুক্তি মোতাবেক সোহেল অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। বাকি টাকা নিয়োগপত্র পাওয়া পর দেওয়ার কথা ছিল।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও এনডিসি মো. মাসুদ রানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নিয়োগপত্র দিয়ে অবশিষ্ট টাকা দাবি করলে সোহেল মিয়ার পরিচিত এক লোক আমাকে বিষয়টি জানান। বিষয়টি জানার পর আমি নিয়োগপত্রে স্বাক্ষরকারী চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) মো. মমিনুর রশিদকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য ফোন করলে তিনি এটি ভুয়া নিয়োগপত্র বলে জানান।’

‘তখন সোহেল মিয়ার মোবাইল ফোন নম্বর যোগাড় করে আমি তার অবস্থান শনাক্ত করি ও পুলিশকে জানাই,’ বলেন তিনি।

তবে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা যিনি নিয়েছেন তাকে আটক বা টাকা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

জড়িত বন্দরের কর্মচারীরা

ডবলমুরিং থানার উপপুলিশ পরিদর্শক অর্ণব বড়ুয়া বলেন, ‘একেবারে নিয়োগপত্রের মতো করেই তারা এটি বানিয়েছে, সেখানে পরিচালক (প্রশাসন) সিল এবং সাক্ষরও রয়েছে।’

‘ভিক্টিমকে বন্দরের কোনো এক জায়গায় একটি রুমে তার চাকুরির জন্য মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে যাতে তার সন্দেহ না হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি এই চক্রের সাথে চটগ্রাম বন্দরের অসাধু কর্মচারীরা সরাসরি জড়িত,’ বলেন তিনি।

অর্ণব বড়ুয়া বলেন, ‘ভুয়া নিয়োগপত্রটি গতকাল ২৪ জুন তারিখে ইস্যু করা। এই চক্রের নেটওয়ার্ক সারাদেশে রয়েছে। আমরা তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করব।   

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা জানান উদ্ধার হওয়া সোহেল এখন তার তত্ত্বাবধানে আছেন। তাকে তার পরিবারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Finance adviser sees no impact on tax collection from NBR dissolution

His remarks came a day after the interim government issued an ordinance abolishing the NBR and creating two separate divisions under the finance ministry

1h ago