কুড়িগ্রামে ২৩ ইউনিয়নে পানিবন্দি মানুষের মানবেতর জীবনযাপন
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামে ধরলা নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আজ রোববার সকালে ধরলা নদীর পানি কুড়িগ্রাম ব্রিজের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য থেকে জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলার ছোট-বড় ১৬টি নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার নয়টি উপজেলার ৪৭টি ইউনিয়নে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। এরমধ্যে ২৩টি ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। রান্না করতে না পারায় পানিবন্দি মানুষ শুধুই শুকনো খাবার খাচ্ছেন, পাচ্ছেন না প্রয়োজনীয় পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি। এসব এলাকার রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় তারা চলাফেরা করতেও চরম সমস্যায় পড়ছেন।
চর ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল এলাকার বাড়ি-ঘরে বন্যার পানি ওঠায় সেখানকার মানুষের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। চরাঞ্চলের মাঠে থাকা ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। ক্ষতি হয়েছে আমন বীজতলা, তিল, বাদাম ও বিভিন্ন সবজীর।
চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ের জোড়গাছ এলাকার পানিবন্দি আকলিমা বেওয়া জানান, তারা পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কিন্তু এখনো মেলেনি কোনো সরকারি বা বেসরকারি সহায়তা। রান্না করতে না পেরে শুকনো খাবার খেয়ে বাঁচতে হচ্ছে তাদের। কিন্তু সেই শুকনো খাবারও এখন আর জুটছে না তাদের ভাগ্যে।
একই এলাকার মেহের আলী বলেন, তার দুই বিঘা জমির তিল ও চার বিঘা জমির বাদাম এখন বন্যার পানির নিচে। আগাম বন্যার কারণে ব্রহ্মপুত্র পাড়ের কৃষকদের অনেকে ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি যোগ করেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, আমন বীজতলা ৩৮ হেক্টর, আউশ ধান ৩৭২ হেক্টর, বিভিন্ন সবজি ১২০ হেক্টর, তিল ১১০ হেক্টর, কাউন পাঁচ হেক্টর, মরিচ ১০ হেক্টর ও পাট এক হাজার ৭৫ হেক্টরসহ প্রায় এক হাজার ৬৯২ হেক্টর ফসলি জমি বন্যার পানিতে ডুবে রয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘ভাঙন কবলিত এবং বানভাসিদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। পানিবন্দি মানুষকে তাৎক্ষনিক সহায়তা দিতে ৩০২ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ৩৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত এগুলো বিতরণের প্রক্রিয়া চলছে।’
Comments