সংবাদ প্রকাশের পর অভিযানে ৬ ট্রলারসহ ৫২ জেলে আটক-জরিমানা
দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনে গতকাল ‘নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। এরপর পুলিশ, মৎস্য দপ্তর, উপজেলা প্রশাসন মাঠে নামে।
কুয়াকাটা সংলগ্ন কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর-আলীপুর মৎস্য বন্দরের শিববাড়িয়া নদীর মোহনায় গতকাল রাতে সাড়াশি অভিযান চালায় মহিপুর থানা পুলিশ ও কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ। এসময় গভীর সাগর থেকে অবৈধভাবে মাছ শিকার করে তীরে ফিরে আসা ছয়টি ট্রলারসহ মোট ৫২ জন জেলেকে আটক করে পুলিশ।
আজ রবিবার সকালে আটককৃত ছয়টি ট্রলারের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে মোট তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়াও, মহিপুর এলাকায় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে বরফকল চালুর অপরাধে হুমায়ুন কবিরের মালিকানাধীন জননী আইচ প্লান্টকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মৎস্য আইন অনুযায়ী কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা এ জরিমানার আদেশ দেন। জরিমানার অর্থ আদায়ের পর আটক জেলেদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আটককৃত ট্রলারের মালিকেরা হলেন- কলাপাড়া উপজেলার আশরাফ মোল্লা, রাঙ্গাবালী উপজেলার আনোয়ার সিকদার, ইউনুস মুন্সী, জাহিদুল ইসলাম, ইদ্রিস মুন্সী ও মাহবুব খলিফা, জানান মনোজ কুমার সাহা।
এর আগে, কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি জগৎ বন্ধু মণ্ডল ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহর নেতৃত্বে রামনাবাদ নদীর মোহনায় অভিযান চালিয়ে সাগর থেকে মাছ শিকার করে কলাপাড়ায় ফেরার পথে দুটি ট্রলার আটক করা হয়। গলাচিপা উপজেলার সাগাম গাজী ও রণজিৎ সাহার মালিকানাধীন ওই ট্রলার দুটির প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে মোট এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, পুলিশ সুপার মাইনুল হাসানের নির্দেশনায় রাত সাড়ে ১১টায় শিববাড়িয়া নদীর মোহনায় অভিযান শুরু হয়ে রাত তিনটা পর্যন্ত চলে। পর্যায়ক্রমে গভীর সাগর থেকে অবৈধভাবে মাছ শিকার করে মহিপুর ও আলীপুর মৎস্য বন্দরে আসার সময় এসব ট্রলার ও জেলেকে আটক করা হয়।
ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, ‘অভিযানের সময় মহিপুর থানা পুলিশ চারটি ট্রলারসহ ২৭ জন জেলে এবং কুয়াকাটা নৌ পুলিশ দুটি ট্রলারসহ ২৫ জন জেলেকে আটক করে। জব্দকৃত ছয়টি ট্রলারই মাছ ভর্তি ছিল। ট্রলারগুলো সবই মহিপুর-আলীপুর এলাকার।’
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান জানান, দেশের মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধি-কল্পে সরকার সাগরে ৬৫ দিন সব ধরনের মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই নিষেধাজ্ঞা সকলের মেনে চলা উচিত।
তিনি বলেন, ‘পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজনে টহল ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ জানান, আটক জেলেরা কয়েকদিন ধরে প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে অবৈধভাবে সাগরে গিয়ে মাছ শিকার করে আসছিলেন।
Comments