‘করোনা ভাইরাস রোধক কার্ড’ অভিনব প্রতারণা
করোনা রোধক কার্ডের বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্ষতিকর চিকিৎসা সামগ্রী বিক্রির অপরাধে দুই চিকিৎসা সরঞ্জাম ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল রাজধানী ঢাকায় চিকিৎসা সরঞ্জাম বিক্রির সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজার বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ভবনে জেলা প্রশাসন ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) যৌথভাবে দিনব্যাপী অভিযান পরিচালনা করেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত দুই ব্যবসায়ীকে এক লাখ ২৪ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন।
জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাহনাজ হোসেন ফারিবা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘একটি কার্ড ঘাড়ে রাখলে এক মাস করোনামুক্ত থাকা যাবে’— এমন বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্ষতিকর চিকিৎসা সামগ্রী বিক্রি করায় দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি কার্ড ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করছিলেন তারা। অথচ এই কার্ড করোনা প্রতিরোধে সক্ষম এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এই চিকিৎসা সামগ্রী মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এতে এক ধরনের কেমিক্যাল উপাদান ক্লোরাইন ডাইঅক্সাইড আছে। এটি আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অংশ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আমরা সত্যিই অবাক হয়েছি, বিএমএ ভবনের এই ধরনের ভুয়া কার্ড বিক্রি হচ্ছে দেখে।’
‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, কয়েকজন ব্যক্তি বিএমএ ভবনে এসে তাদের কার্ড সরবরাহ করতেন। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তারা দোকান থেকে বিক্রির পাশাপাশি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করছিলেন। আমরা কিছু তথ্য পেয়েছি, কার্ড সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিএমএ ভবন মালিক সমতির নেতারা আশ্বাস দিয়েছেন, এ ঘটনায় তারা ব্যবস্থা নেবেন এবং এই কার্ড পরবর্তীতে আর বিক্রি করতে দেওয়া হবে না’— বলেন ফারিবা।
বিএমএ ভবন দোকান মালিক কল্যাণ সমিতির যুগ্ম সচিব মো. ইলিয়াস লসকর বলেন, তারা বিষয়টি জানতেন না এবং কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেও কোনো ধরনের নোটিশ পাননি।
ঔষধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক মো. আজিউল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এই কার্ড বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। সারা দেশে ফার্মেসিগুলোতে অভিযান চালানো হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না কীভাবে এই ভাইরাস শাট আউট কার্ড খালাসের অনুমতি দেওয়া হলো। আমরা এই ওষুধের অনুমোদন দিইনি।’
গত ২০ এপ্রিল জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাহনাজ হোসেন ফারিবা অভিযান চালিয়ে ৫০ পিস কার্ড জব্দ করেন।
Comments