বিপৎসীমার উপরে সুরমার পানি

করোনা আতঙ্কে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনীহা

Sunamganj_Flood.jpg
আশ্রয়কেন্দ্রে ত্রাণ বিতরণ করছেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক। ছবি: সংগৃহীত

বৃষ্টি কম হওয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা কমেছে। তবে এখনো বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার পশ্চিম হাজিপাড়ার রূশনারা বেগমের ঘরে এক হাঁটু পানি জমে আছে। রোববার রাতে আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রতিবেশীর বাড়ির সিঁড়িতে। গতকাল সকালে এক মাইল নৌকা বেয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে তিন সন্তান ও স্বামীর জন্য খাবার রান্না করে এনেছেন। আজ কী করবেন জানেন না।

রূশনারা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘করোনার ভয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছি না। স্বামী-সন্তান যদি করোনায় আক্রান্ত হয় তাহলে আরও বিপদে পড়তে হবে।’

মল্লিকপুরের সাবান মিয়া বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে যেভাবে থাকতে হবে, তাতে বন্যা থেকে বাঁচলেও করোনা হতে পারে।’

জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমি সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছিলাম। প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিড়া, মুড়ি, গুঁড়, দিয়াশলাই, মোমবাতি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরন করার সময় সবাইকে স্বাস্থবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হলো। কিন্তু কেউ সেসব মানছে না। ত্রাণের খবর পেলেই সবাই স্বাভাবিক সময়ের মতো ভিড় করছেন। এই অবস্থা দেখে বাড়িতে চলে এসেছি।’

একই কথা বললেন সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের পুরান লক্ষণশ্রী গুচ্ছগ্রামের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে আসা মল্লিকপুরের বাসিন্দা আব্দুল রশিদ। তিনি বলেন, বেশিরভাগ মানুষ মাস্ক পর্যন্ত পড়ছেন না।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘জেলায় ১১টি উপজেলা কমপ্লেক্স ভবনসহ ১২৭টি আশ্রয়কেন্দ্র আছে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৪১০ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ২৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চার হাজার ৭৫২টি পরিবারের জন্য শিশুখাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এলাকায় এলাকায় মাইকিং করে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে বলা হচ্ছে। স্বাস্থবিধি মানার বিষয়টিকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সাবিবুর রহমান বলেন, ‘আজ সকাল থেকে সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পুরাতন সুরমায় বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।’

Comments