মাদক বিক্রিতে না, স্ত্রীর চোখ তুলে নিল স্বামী

মাদক বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় কলহের জেরে একজনের বিরুদ্ধে স্ত্রীর একটি চোখ তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ রবিবার ভোররাতে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের মাইস্তা চৌধুরীবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
Akhi Akter.jpg
আহত আখি আক্তার। ছবি: স্টার

মাদক বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় কলহের জেরে একজনের বিরুদ্ধে স্ত্রীর একটি চোখ তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ রবিবার ভোররাতে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের মাইস্তা চৌধুরীবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

কালিহাতী পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী মির্জাপুর উপজেলার বুসুন্দি গ্রামের ফারুক হোসেন (২৫) পলাতক আছেন। অপরদিকে আহত আখি আক্তারকে (২০) ঢাকার শেরেবাংলা নগরের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আখির পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, রাত আনুমানিক ২টায় সিঁধ কেটে আখির (পৈতৃক বাড়ির) ঘরে প্রবেশ করে কাঁচি দিয়ে ঘুমন্ত স্ত্রীর চোখে আঘাত করে পালিয়ে যান ফারুক।’

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. শফিকুল ইসলাম সজিব জানান, রাত তিনটায় আখিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তিনি বলেন, ‘আখির বাম চোখটি ধারালো কিছু দিয়ে তুলে ফেলা হয়েছে এবং সেটি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরে সকালে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শেরেবাংলা নগরের জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে পাঠানো হয়।’

আহত আখির চাচা খোকন মিয়া সাংবাদিকদের জানান, ‘কয়েক বছর আগে তার ভাতিজি আখির সঙ্গে ফারুকের বিয়ে হয়। তাদের দুই বছরের একটি কন্যা সন্তান আছে। বিয়ের প্রথম কিছুদিন ভালো কাটলেও, পরবর্তীতে পিতা বিদেশ থাকার সুযোগে ফারুক মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে এবং এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসা শুরু করে। দেড় বছর আগে থেকে ফারুক স্ত্রী আখিকেও মাদক বিক্রি করতে চাপ দিয়ে আসছিল। এতে আখি রাজি না হলে তাদের মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘একপর্যায়ে আখি পিতার বাড়ি ফিরে আসে। পরে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করে আখিকে আবার স্বামীর বাড়ি ফিরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু একই সমস্যার কারণে কিছুদিন পর আখি আবার বাবার বাড়ি ফিরে আসে এবং বছর খানেক আগে একটি গার্মেন্টসে চাকরি নিয়ে গাজীপুর চলে যায়। গত রমজান মাসে ফারুক সেখানে গিয়ে আখিকে ছুরিকাঘাত করে আহত করে আসে। তখন এ ব্যাপারে গাজীপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছিল।’

কালিহাতী থানার ওসি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য একজন কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। নির্যাতিতার পিতাকে থানায় এসে এ ব্যাপারে মামলা দায়ের করতে বলা হয়েছে। মামলার পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Comments