চেয়ারম্যান-মেম্বার পলাতক, ত্রাণ পাচ্ছেন না বগুড়ার কর্নিবারী ইউনিয়নের বন্যা দুর্গতরা

Bogura_Flood_16Jul2.jpg
নদীর ভেতরে একটি ছোট বাঁধে গবাদিপশু-আসবাবপত্র নিয়ে গাদাগাদি করে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় দুই শ পরিবার। ছবি: স্টার

উজানের পানিতে বগুড়ার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার তিনটি উপজেলার প্রায় এক লাখ ২৬ হাজার মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ১২৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় এবার বেসরকারিভাবে ত্রাণ দিতে কেউ এগিয়ে আসতে পারছে না। সরকারি ত্রাণও পাননি অনেকে। সারিয়াকান্দি উপজেলার কর্নিবারী ইউনিয়নের শনপচার চরে প্রায় সাত হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। তারা কোনো ধরনের ত্রাণসামগ্রী পাননি বলে জানিয়েছেন।

তারা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাহার আলী একটি হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় পরিবার নিয়ে পালিয়ে আছেন। যে কারণে তারা সরকারি ত্রাণ সাহায্য পাচ্ছেন না।

নদীর ভেতরে একটি ছোট বাঁধে গবাদিপশু-আসবাবপত্র নিয়ে গাদাগাদি করে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় দুই শ পরিবার। বন্যার পানিতে ডুবে গেছে তাদের ঘর-বাড়ি। গত ২৭ জুন থেকে তারা বাঁধে আসতে শুরু করেন। সেখানে প্রয়োজনীয় খাবার সংকট থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কেউ ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যায়নি।

এই বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন মন্তেজার রহমান। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘জুন মাসের ২৭ তারিখ থেকে আমাদের এখানে বন্যা দেখা দিয়েছে। সেই থেকেই আমরা এই বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। ফসল তলিয়ে গেছে। হাতে কোনো কাজ নেই। তবুও সরকার বা বেসরকারিভাবে কেউ আমাদের সাহায্য দিতে আসেনি এবার। আমাদের চেয়ারম্যান একটি মার্ডার কেসের আসামি। গত দুই মাস হলো সে পালিয়ে আছে। ইউনিয়ন পরিষদে যে ত্রাণ আসে তার কিছুই আমরা এবার পায়নি।’

আসর আলী নামে আরেক জন বলেন, ‘গত বছর সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ পেয়েছিলাম। এবার কেউ আমাদের দেখতেও আসলো না।’

মো. মিঠন নামে এক যুবক বলেন, ‘চেয়ারম্যান হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় একজন ইউপি সদস্য তার দায়িত্ব পালন করছেন। তবে তিনিও আমাদের কাছে কোনো সাহায্য নিয়ে আসেননি।’

এই বিষয়ে সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল-আমিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কর্নিবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং তার পরিবারের বেশ কিছু সদস্য একটি হত্যা মামলার আসামি। গত এপ্রিল মাস থেকে চেয়ারম্যান পালিয়ে আছেন।’

কর্নিবারী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এবারের বন্যায় ত্রাণ হিসেবে তিনি ১৫ মেট্রিক টন চাল, দুই শ কেজি চিড়া, এক শ প্যাকেট শুকনো খাবার, গুঁড় ও ২০ প্যাকেট শিশুখাদ্য পেয়েছেন। বন্যাদুর্গত মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য এগুলো অন্যান্য ইউপি সদস্যদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। শনপচার চরের ইউপি সদস্য সাইদুল ইসলাম পলাতক, আরেকজন নারী ইউপি সদস্য অসুস্থ। সেই কারণেই হয়তো সেখান ত্রাণ পৌঁছায়নি।’

গতকাল এই বিষয়ে সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাসেল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী দিয়েছি ওই ইউনিয়নে। আমি খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

আজ সকালে খবর নিয়ে জানা গেছে সেখানে কোনো ত্রাণ পৌঁছায়নি। এই বিষয়ে রাসেল মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যানকে বলে দিয়েছি। শিগগির তিনি ওই এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করবেন।’

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago