টাঙ্গাইলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি
টাঙ্গাইলের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। উজান থেকে আসা পানির ঢল অব্যাহত থাকায় জেলার সকল নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে অস্বাভাবিক পরিমাণে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার, ঝিনাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও জেলার অন্যান্য নদীর পানিও বিপৎসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির প্রবল স্রোতে বিভিন্ন উপজেলার গ্রামীণ সড়ক ভেঙ্গে বন্যার পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে। এতে বন্যা কবলিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ছয় উপজেলার ২৬ ইউনিয়নের ১৫১টি গ্রামের প্রায় দেড় লাখ মানুষ।
জেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বন্যার্তদের মধ্যে ৪০০ মেট্রিক টন চাল, নগদ আট লাখ টাকা এবং চার হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। প্রয়োজনে ত্রাণ তৎপরতা আরও বাড়ানো হবে।
বন্যায় টাঙ্গাইলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভূঞাপুর উপজেলা। পানি বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার চরাঞ্চল দ্বিতীয় দফায় বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। যমুনার ভেতরে অবস্থিত দ্বীপ ইউনিয়ন হিসেবে পরিচিত গাবসারা ইউনিয়ন সম্পূর্ণ এবং অর্জুনা ও গোবিন্দাসি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের বাড়িঘরে ঢুকেছে পানি।
এসব এলাকা প্রথম দফায় বন্যা কবলিত হওয়ার পর পানি কমতে শুরু করেছিল। তবে, গত ১২ জুলাই থেকে যমুনার পানি বাড়তে শুরু করে।
গাবসারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এই ইউনিয়নের মোট ৪৭টি গ্রামের সবগুলোই বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এ পর্যন্ত সরকারিভাবে পাওয়া আট মেট্রিক টন চাল বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আরও শুকনো খাবার প্রয়োজন।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, প্রথম দফা বন্যায় টাঙ্গাইলের ছয়টি উপজেলায় মোট ২৭ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া মোট তিন হাজার ৮৩৯ হেক্টর জমিতে বোনা আমন, রোপা আমনের বীজতলা, আউশ, পাট, তিল এবং সবজি নষ্ট হয়েছে।
দ্বিতীয় দফা বন্যায় আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট এক হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমির ফসল ডুবে গেছে। এর মধ্যে বোনা আমন এক হাজার ৩৪০ হেক্টর, রোপা আমনের বীজতলা ১১৪ হেক্টর, আউশ ৫১ হেক্টর এবং সবজি ১৬০ হেক্টর।
Comments