জুলুম-দখলের প্রতিবাদে চাঁপাইনবাবগঞ্জে রাজোয়ার সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ সমাবেশ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে রাজোয়ার সম্প্রদায়ের উপর জুলুম, নির্যাতন, ভূমি থেকে উচ্ছেদের হুমকি দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজোয়াড় সম্প্রদায় আজ শনিবার তাদের গ্রামে এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। ছবি: স্টার

চাঁপাইনবাবগঞ্জে রাজোয়ার সম্প্রদায়ের উপর জুলুম, নির্যাতন, ভূমি থেকে উচ্ছেদের হুমকি দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সদর উপজেলার টংপাড়া গ্রামের রাজোয়াড় সম্প্রদায় আজ শনিবার তাদের গ্রামে এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।

সমাবেশে বক্তব্য দেন উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি হিংগু মুরমু, আদিবাসী মুক্তি মোর্চার সভাপতি বিশ্বনাথ মাহাতো, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক বিমল রাজোয়াড়, করুনা রাজোয়াড়, কুটিলা রাজোয়াড়, বাসদ নেতা জয়নাল আবেদীন মুকুল প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সদর উপজেলার টংপাড়া গ্রামে শতাধিক বছর আগে থেকে রাজোয়াড় সম্প্রদায় খাস জমিতে একটি দীঘির পাশে বসবাস করে আসছে। কখনো কোনো অসুবিধা হয়নি। কিন্তু, গত সাত বছর ধরে তাদের বসত ভিটা দখলের চেষ্টা এবং বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে।

কয়েকজন ভূমি দস্যু টংপাড়া গ্রামের রাজোয়ার সম্প্রদায়ের জমি দখলের চেষ্টা করে আসছে। অথচ এই খাস জমিটি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান।

স্থানীয়রা জানান, শতাধিক বছর আগে থেকে তাদের জমিতে বসবাস করে আসলেও সম্প্রতি সেই জমি দখলের জন্য নানাভাবে তাদের উপর নির্যাতন অব্যাহত আছে। সম্প্রতি নিমচাঁদ রাজোয়াড়কে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। গত ২৫ জুন আদিবাসী নেতা বিশ্বনাথ মাহাতো ও বঙ্গপাল সরদারকে রড দিয়ে আঘাত করে আহত করা হয়েছে।

এছাড়াও গত ১৬ জুলাই করুনা, কুটিলা, পলাশ ও চন্দন রাজোয়ারকে জীবননাশের হুমকি দেওয়া হয়। তারা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

সমাবেশের নেতৃবৃন্দ টংপাড়া গ্রামের রাজোয়ার সম্প্রদায়ের মানুষদের নিরাপত্তা দাবি করেন।

উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি হিংগু মুরমু জানান, ঐ এলাকায় পুকুর, বাড়িসহ মোট ছয় একর ১১ শতক জমি আছে। এই খাস জমি জনৈক ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম ২০১৪ সালে তার নামে করে নেয়। সে বছরই শহর থেকে লোক পাঠায় বাড়িঘর ভাঙচুর করতে। স্থানীয়রা বিষয়টি বুঝিয়ে বলার পর তারা ফিরে যায়। খাসজমি তরিকুল ইসলাম নিজ নামে করে নেওয়ার বিষয়টি জানার পর স্থানীয়রা সহকারী জজ আদালত, সদর কোর্টে মামলা দায়ের করে। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।

তিনি আরও জানান, ঐ একই বছর তরিকুল ইসলামের লোকজন জমিতে গাছ লাগাতে গেলে স্থানীয়রা বাধা দেয়। এতে দুপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এ ঘটনার পর তরিকুল ইসলাম তাদর বিরুদ্ধে ১৭টি মিথ্যা মামলা দায়ের করে।

তারা তরিকুল ইসলামে বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে একটি মামলা দায়ের করে।

এরপর থেকে সে পুকুর দখল ও রাজোয়ারদের বাড়ি দখল করে উচ্ছেদের চেষ্টা করে আসছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি জিয়াউর রহমান বলেন, ‘গতকাল তাদের একটা জিডি নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চেষ্টা করেও এ বিষয়ে মন্তব্য জানার জন্য ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Comments