মেয়াদ শেষ হলেও কাজ এখনো বাকি ৬০ ভাগ

রাস্তা খারাপের অজুহাতে পরিবহন চালকরা দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছেন এই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীদের কাছ থেকে। ছবি: স্টার

পৃথিমপাশা ইউনিয়নের বাসিন্দা সৈয়দ আশফাক তানভীর। প্রতিদিন অফিসের কাজে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের আওতাধীন কুলাউড়া-পৃথিমপাশা ও রবিরবাজার-টিলাগাঁও বাজার সড়ক ব্যবহার করেন তিনি। এই সড়কগুলো অনেকদিন ধরেই খারাপ ছিল। সড়ক সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে বর্ষায় কাদা আর শুষ্ক মৌসুমে ধুলোবালিতে ভরে থাকে সড়ক দুটি।

স্থানীয় সমাজসেবামূলক সংগঠন রবিরবাজার ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আশফাক তানভীর বলেন, ‘আমরা বিপদে পড়েই এই সড়ক ব্যবহার করি। কারণ এটি জেলা বা উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম প্রধান সড়ক। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এটি নজরে নিচ্ছে না।’

তিনি জানান, এই সড়কের কারণে উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের পাঁচ ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াতে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। রাস্তা খারাপের অজুহাতে পরিবহন চালকরা দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছেন এই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীদের কাছ থেকে। সড়কের চলমান কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবিতে এলাকার ভুক্তভোগীরা মানববন্ধনও করেছিলেন। তারপরও কাজের কোনো অগ্রগতি হয়নি।

কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের ব্যবসায়ী হাজী মারুফ আহমদ জানান, কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবিতে বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী বিভিন্ন এলাকার মানুষ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। কিন্তু তাতেও কাজের গতি বাড়েনি।

সওজ অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী সহদেব সূত্রধর বলেন, ‘এই ১৬ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন কাজ ১৮ মাস মেয়াদে শেষ করার জন্য ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় ঢাকার ওয়াহিদ কন্সট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তারা কাজ পাওয়ার পর কাজ শুরু হয় গত বছরের জানুয়ারি মাসে। সড়কটির নির্ধারিত কার্য সম্পাদনের সময় ছিল গত ৩০ জুন। ওই সড়ক দিয়ে উপজেলার রাউৎগাঁও, পৃথিমপাশা, কর্মধা, টিলাগাঁও ও হাজীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার অন্তত লক্ষাধিক মানুষ বিভিন্ন কাজে প্রতিদিন উপজেলা সদরসহ মৌলভীবাজার জেলা সদরে চলাচল করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘কুলাউড়া-পৃথিমপাশা ও রবিরবাজার-টিলাগাঁও বাজার সড়কের কাজ ৪০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।’

কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এলসির মাধ্যমে পাথর সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। কোথাও পাথর পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে সড়কগুলোর অবশিষ্ট অংশে পাথরের স্তর দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’

সড়ক ও জনপদ (সওজ) অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে সরকার এখন চলমান সব কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কের কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে আশা করছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ‘জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের কাজের ধীরগতির বিষয়ে জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি কাজের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কাজটি দ্রুত শেষ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।’

Comments

The Daily Star  | English

Govt calls for patience as it discusses AL ban with parties

Taken the initiative to introduce necessary amendments to the ICT Act, says govt

1h ago