শ্রীলঙ্কা সফর দিয়েই ক্রিকেট ফেরাতে চায় বিসিবি
‘জানি না, আবার কবে টেস্ট খেলব।’ ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট দেখার কথা জানিয়ে এমন হতাশাভরা টুইট করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। চার মাসের স্থবিরতা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরার ওই ম্যাচ দেখার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়ে একই অনুভূতি প্রকাশ করেন সৌম্য সরকারও। তারা কবে আবার খেলায় ফিরবেন, বড় এই প্রশ্ন এতদিন কেবলই ধোঁয়াশায় থাকলেও এখন তা নাকি অনেকটা স্পষ্ট হতে চলেছে। বিসিবি এরমধ্যেই ঠিক করেছে নিজেদের পরিকল্পনা।
আইসিসি চলতি বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিত করে নতুন সূচি দিয়েছে। আগামী দুই বছর দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আর ২০২৩ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের পুনর্নিধারিত সূচি দেওয়া হয়েছে।
আর এতে অনিশ্চয়তার মেঘ যেন কিছুটা কাটতে শুরু করেছে। নিজেদের ক্রিকেটে ফেরার রূপরেখা নিয়ে ভাবার একটা পরিষ্কার ছবি দেখছে বোর্ড।
এমনটাই মত বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরীর, ‘স্থগিতের এই সিদ্ধান্ত আমাদের একটা স্পষ্ট ছবি দিচ্ছে। ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের খেলাগুলোর দিন তারিখ একদম চূড়ান্ত নয় কিন্তু আমাদের পরিকল্পনা কিছুটা সহজ হয়েছে। আমি বলতে চাই বর্তমান এফটিপিতে কোন দলই বঞ্চিত হবে না। সর্বশেষ সভার পর বড় ইভেন্টগুলো সব সেটেল হয়ে গেছে।’
আইসিসি ইভেন্ট ঠিক হয়ে যাওয়ায় দ্বিপাক্ষিক সিরিজ নিয়ে ভাবার সুযোগ পেয়েছে বিসিবি। কিন্তু দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নাজুক থাকায় আপাতত হোম সিরিজের চিন্তা নেই বোর্ডের। বিশেষ করে স্থগিত হয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কা সিরিজ নিয়ে আবার নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে।
নিজামউদ্দিন জানান, এই জুলাই -অগাস্টে সূচি থাকা শ্রীলঙ্কা সিরিজ স্থগিত হয়েছিল পরিবর্তিত বাস্তবতায়। কিন্তু স্থগিতের সময়ই কথা ছিল দুই পক্ষেই সমঝোতা পরে সিরিজটি আয়োজিত হবে। ক্রিকেট ফেরাতে এখন এই সিরিজটি নিয়েই মূল ভাবনা বিসিবির, সেজন্য কাজও শুরু করেছে বোর্ড ‘আমাদের মনে হচ্ছে যদি দেশের বাইরে সিরিজ খেলা যায়, সেটা হবে সেরা বিকল্প। কাজেই ক্রিকেট ফেরাতে আমাদের মূল প্রাধান্য হবে শ্রীলঙ্কা সিরিজ আবার পুনঃনির্ধারণ করা।’
‘কাজ চলছে, আমরা শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছি।’
গত মে মাসে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলতে আয়ারল্যান্ড সফর করার কথা ছিল বাংলাদেশের। সেই সফরও আবার করা যায় কীনা এমন ভাবনা থাকলেও তাতে বড় বাধা ক্রিকেট আয়ারল্যান্ডের সামর্থ্য, ‘আয়ারল্যান্ড সিরিজ হতে পারত আরেকটি বিকল্প। কিন্তু তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার কথা চিন্তা করতে হচ্ছে। তৃতীয় বিকল্প হচ্ছে পাকিস্তান সফর, যেখানে আমাদের এক টেস্ট খেলার কথা। কিন্তু পাকিস্তানে এই সময়ে খেলার অবস্থা নেই।’
মার্চের মাঝামাঝিতে শুরুর পরই বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ। রুটি-রুজির ব্যাপার থাকায় লিগ চালুর ব্যাপারে স্থানীয় ক্রিকেটারদের চাপ আছে। বিসিবিও ঘরোয়া এই আসর চালুর কথা ইতিবাচকভাবেই ভাবছে। কিন্তু বিসিবি সিইও জানালেন, প্রাধান্যের দিক থেকে সবার আগে শ্রীলঙ্কা সফর, ‘একই সঙ্গে ঘরোয়া ক্রিকেট প্রাধান্য দিচ্ছি, কীভাবে আমরা দ্রুত এটা শুরু করতে পারি। প্রাধান্যের দিক থেকে যদি বলি তাহলে শ্রীলঙ্কা সফর প্রথমে আসবে, তারপর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, বিপিএল আমাদের তৃতীয় প্রাধান্য হিসেবে থাকবে। এছাড়া আয়ারল্যান্ড সফরকে চার নম্বরে রাখব।’
‘করোনা পরিস্থিতির কারণে ঘরোয়া লিগ একটু চ্যালেঞ্জের। কিন্তু আমরা ক্লাবগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করছি। একইসঙ্গে বিপিএলের ফ্রেঞ্চাইজির সঙ্গেও আলাপ চলছে।’
Comments