সুনামগঞ্জে এক লাখেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি

অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে নদী ও হাওরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তৃতীয় দফায় সুনামগঞ্জে বন্যার কবলে পড়ে হাওর পাড়ের লোকজন গত চার দিন ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। জেলা প্রশাসনের বন্যা তথ্য কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা এক লাখ ১৩ হাজার ২৩৭।
সুনামগঞ্জে এক লাখেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি। ছবি: স্টার

অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে নদী ও হাওরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তৃতীয় দফায় সুনামগঞ্জে বন্যার কবলে পড়ে হাওর পাড়ের লোকজন গত চার দিন ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। জেলা প্রশাসনের বন্যা তথ্য কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা এক লাখ ১৩ হাজার ২৩৭।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান জানান, সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ২১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর পুরাতন সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের খরচার হাওড়ের রাদানগর গ্রামের সাদ্দাম মিয়া জানান, তাদের গ্রাম প্রত্যন্ত হাওড় এলাকায়। তিন দিন থেকে সুরমার পানি সবার বাড়িতেই প্রবেশ করেছে।

গৌরারং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফুল মিয়া বলেন, ‘৪৫টি গ্রাম মিলে আমার ইউনিয়ন। প্রায় সব গ্রামের মানুষই পানিবন্দি।’

সুরমা নদীর প্রবল বেগে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার পূর্ব ইব্রাহীমপুর গ্রামের বাসিন্দা গাজী রহমান, ফারুক মিয়া, জগলুল মিয়াসহ আরও অনেকের বাড়ির মানুষ পানিবন্দি। গাজী রহমান বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্দি। এবার একাধিকবার বন্যায় আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি।’

গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রতিবার বন্যায় আমাদের বাড়িঘরে পানি উঠেছে। ঘরের অনেক আসবাবপত্র নষ্ট হয়েছে। গত ২০-২৫ দিন ধরে ঘরের ভেতরে প্রায় দেড় ফুট পানি রয়েছে। মাঝেমধ্যে পানি সামান্য কমে, আবার বাড়ে। এভাবে গ্রামের অনেক মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।’

তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওড়ের জয়পুর গ্রামের বিনয় দাশ বলেন, ‘গত চার দিন ধরে আমরা পানিবন্দি।’

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা এক লাখ ১৩ হাজার ২৩৭। আমরা সবদিকেই ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।’

সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আগামী দুই দিন সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হবে। অন্যদিকে সুনামগঞ্জের উজানে ভারতের আসাম চেরাপুঞ্জিতে ৪০০ থেকে ৪৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে।’

Comments