লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

Lalmonirhat flood
ধরলার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর ফলিমারীতে বন্য পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ২৪ জুলাই ২০২০। ছবি: এস দিলীপ রায়

লালমনিরহাটে ধরলার পানি ৫০ সেন্টিমিটার বেড়ে আজ শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে বিপৎসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে

লালমনিরহাট সদর ও আদিতমারী উপজেলার তিনটি ইউনিয়েনের ২০টি গ্রাম ধরলার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। চরম দুর্ভোগে রয়েছেন সে সব গ্রামের ২০ হাজারের বেশি মানুষ।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের সীমান্তঘেষা চর ফলিমারীতে বানভাসি মানুষের কষ্ট বেড়েছে অনেক। বানভাসিরা গবাদি পশু-পাখি ও ঘরের আসবাবপত্রসহ ফসলাদি নিয়ে চরমভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

চর ফলিমারীতে বসবাস করেন তিনশ পরিবারে প্রায় ১৫০০ মানুষ। গ্রামের সবাই কৃষি ও মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। গ্রামের পশ্চিম ও দক্ষিণে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া আর পূর্ব ও দক্ষিণে ধরলা নদী।

ধরলার পানি বাড়লে প্রথমে এই চরের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন। প্লাবিত হয় পুরো গ্রাম। এখানে কোনো বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নেই। নেই সরকারি রাস্তা, পানি উন্নয়নের বাঁধ বা উঁচু কোনো স্থান। শুধু ছোট একটি বাজার রয়েছে। সেই বাজারটিতেও বন্যার পানি উঠতে শুরু করেছে। সেখানে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রের দাবি তুলেছেন বানভাসিরা।

চর ফলিমারী এলাকার বানভাসি তমির উদ্দিন (৯৫) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা বানের পানিতে ভাসতেছি। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপাকে আছি। বাজারেও বন্যার পানি উঠতে শুরু করেছে। দীর্ঘদিন থেকে এখানে একটি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু, প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই মিলেনি।’

মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ডেইল স্টারকে বলেন, ‘চার বছর আগে চর ফলিমারীতে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছিল। কাজের অগ্রগতিও হয়েছিল অনেকটা। কিন্তু মাঝপথে থেমে যায়। এখানে মুজিব কেল্লা তৈরির জন্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিনিধি দল গত ফেব্রুয়ারিতে এসে পরিদর্শন করেছে। মুজিব কেল্লা হলে এটি একদিকে যেমন বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে উপকারে আসবে অন্যদিকে কমিউনিটির উন্নয়নে নানা সামাজিক কাজকর্মে সহায়ক হবে।’

লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার রায় ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘চর ফলিমারীতে মুজিব কেল্লা তৈরির টেন্ডার হয়েছে ও ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে ঠিকাদার কাজ শুরু করতে পারেননি।’

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে চর ফলিমারীতে মুজিব কেল্লা তৈরির কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মুজিব কেল্লা তৈরির কাজ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে দেখাশুনা করা হচ্ছে। আমি মনে করি, মুজিব কেল্লা তৈরি হলে চর ফলিমারীর মানুষের দুঃখ দূর হবে।’

জেলায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদীর আশপাশে বন্যা পরিস্থিতির নতুন করে অবনতি হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English

Industrial output soars, but where are the jobs?

Over the past decade, more and more industries have sprung up across the country, steadily increasing production. But while output rose, factories did not open their doors to more workers.

11h ago