‘হামার কাছোত অ্যালা এক পুতলি খিচড়ির দাম ম্যালা’
‘হামার কাছোত অ্যালা এক পুতলি খিচড়ির দাম ম্যালা। অ্যালা খিচড়ি কাই হামাক দ্যায়’— এভাবেই আঞ্চলিক ভাষায় কষ্টের কথা বলছিলেন লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তাপাড়ের ইউনিয়ন খুনিয়াগাছের হরিণচড়া মাঝের চরের বাসিন্দা রহিমা বেওয়া। বন্যার কারণে ৭২ বছর এই বৃদ্ধাকে খাবারের খোঁজে বের হতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘হামরাগুলা বানের পানিত ভাসি বেড়াইলোং কিন্তু কাইও হামার উদ্দিশ করে নাই। ঘরোত খাবার নাই। না খ্যায় আর কতখোন থাকা যায় বাহে। মাইনসে হামাক খিচড়ি দিবার আইসছে, হামরা এইল্যা নিয়া বাড়িত ছওয়াপোয়া সুইদ্দায় খামো।’
চর রাজপুরের বাসিন্দা শেফালী রানী বলেন, ‘বানের পানিতে ফসল নষ্ট হয়েছে। ভেসে গেছে হাঁস-মুরগি ও ঘর। খাবার নেই, হাতে কাজও নেই।’
বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন গতকাল শনিবার বিকালে লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ও খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের তিস্তার বুকে চরাঞ্চলে বন্যা দুর্গত মানুষের মাঝে ছয় শ প্যাকেট খিচুড়ি বিতরণ করে। সে সময় খাবারের জন্য বানভাসী মানুষদের ছোটাছুটি করতে দেখা যায়।
খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম আমু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তার এলাকায় ৪৫ হাজার মানুষ বসবাস করেন। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ মানুষ বন্যা কবলিত। সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত তিনি ২১ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পেয়েছেন। যা দিয়ে ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ মানুষকে সহায়তা করা সম্ভব। ইতোমধ্যে ১২ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।’
রাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে ৩৮ হাজার মানুষ বাস করেন। তাদের ৮০ শতাংশ বন্যা দুর্গত। বরাদ্দ পাওয়া ২১ মেট্রিক টন চাল ২০ শতাংশ মানুষকে দিতে পেরেছি। বাকিদের কোনো সহায়তা করতে পারিনি।’
Comments