বরিশাল

কাঁচা চামড়া সংগ্রহ ৩০ ভাগ কমে যাওয়ার আশংকা

এবার বরিশালে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ ৩০ ভাগ কমে যাওয়ার আশংকা করছেন ব্যবসায়ীরা। ১ আগস্ট ২০২০। ছবি: স্টার

বরিশালে কাঁচা চামড়া সংগ্রহের কেন্দ্রস্থল নগরীর পদ্মাবতী এলাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। কোনো ভিড়, হৈচৈ ছাড়াই অল্প সংখ্যক মানুষকে পাইকারি মার্কেটে কাঁচা চামড়া বেচাকেনা করতে দেখা যায়।

গতকাল শনিবার ব্যবসায়ীরা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন আগের বছরের তুলনায় কাঁচা চামড়া সংগ্রহ অন্তত ৩০ ভাগ কম হচ্ছে এবার।

বরিশাল চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির মতে, বিগত বছর ৬৫ হাজার গরুর চামড়া সংগ্রহ হলেও, এবার ৪০ থেকে ৪৫ হাজারের বেশি হবে না।

করোনার কারণে এবার চামড়া আমদানিও অনেক কম বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

করোনার প্রাদুর্ভাবে মানুষের আর্থিক অবস্থা শোচনীয় হওয়ায় অনেকেই এ বছর কোরবানি দিতে পারেননি। এর প্রভাব দেখা গেছে কাঁচা চামড়ার পাইকারি বাজারে।

বাজারে ছোট গরুর চামড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, মাঝারি গরুর চামড়া ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ও বড় গরুর চামড়া ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বেচাকেনা হয়েছে। ছাগলের চামড়ার তেমন কোন দাম নেই বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বরিশাল চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি সহিদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এবার অন্তত ৩০ ভাগ চামড়া সংগ্রহ কম হবে। আমরা কাঁচা চামড়া রপ্তানি করার দাবি জানাই সরকারের কাছে। সরকার ট্যানারি মালিকদের প্রণোদনা দিচ্ছে। কিন্তু, আমরা ব্যবসায়ীরা তা পাচ্ছি না। এ জন্য, আমরা বিনিয়োগও করতে পারছি না।’

তারাও সরকারের কাছে প্রণোদনা প্রত্যাশা করছেন বলে জানান তিনি।

এ বছর পাইকারি চামড়া ব্যবসায় হঠাৎ করে ফড়িয়াদের দেখা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, চামড়া ব্যবসায় লাভ নেই দেখে তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এবার কেবল মাদরাসার কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকদেরকেই চামড়া বেচতে দেখা গেছে বলে জানান তারা।

নগরীর নতুন বাজার থেকে ২০টি চামড়া আনেন মাদরাসা শিক্ষক আবদুর রাজ্জাক। তাকে চামড়া প্রতি ৩৫০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা মাদ্রাসার ১৩ জন শিক্ষক সারাদিন কাজ করার পর, মাত্র ৭,০০০ টাকার চামড়া বেচতে পেরেছি। আমাদের পরিশ্রমের কোনো মূল্যই ওঠেনি। ২০১৪ সালে আমরা প্রতি পিস চামড়া বিক্রি করেছিলাম ২,৮০০ টাকা দরে। কেনো এই দর পতন জানি না।’

বটতলা বহুমুখী মাদরাসার শিক্ষক শামীম উল্লাহ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সাইজের ২৫০টি গরুর চামড়া সংগ্রহ করেছি। বিক্রি করতে এসে মোটেও দাম পাচ্ছি না। প্রতি চামড়া গড়ে ৩০০ টাকা করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ব্যবসায়ীরা।’

পাঁচটি ছাগলের চামড়া এনেছিলেন শামীম নামে এক যুবক। তিনি ডেইলি স্টারকে জানান, এই চামড়া আনতে যে রিকশা ভাড়া খরচ হয়েছে, সে টাকাও উঠেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেকেই কোরবানির পর চামড়া বিক্রি না করে মাদরাসায় দান করেছেন। কিন্তু, সেই চামড়া নিয়ে বাজারে এসে হতাশ হয়ে পড়েছেন মাদরাসা শিক্ষকরা।

চামড়া ব্যবসায়ী নাসিরুদ্দিন মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আগে চামড়া কিনতে ট্যানারি মালিকরা আমাদের আগাম টাকা দিত। কিন্তু, এখন আগাম তো দূরের কথা, আগের বকেয়াও দিচ্ছে না। এর ফলে, হাতে টাকা না থাকায়, চামড়া কিনতে পারছি না। আগে যেখানে ৩০ থেকে ৩৫ জন ব্যবসায়ী চামড়া কিনতো, এখন তা কমে ৫ থেকে ৬ জনে এসে দাঁড়িয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English
Former president Hamid airport CCTV footage

The story of Hamid’s exit

Security footage obtained and analysed by The Daily Star shows that Hamid's car reached the barrier gate of the VIP terminal at 12:46am on May 8

12h ago