ফেনীতে কুরবানির পশুর চামড়ার দামে ধস
ফেনীতে কুরবানির পশুর চামড়ার দামে ধস নেমে এলাকা ভেদে গরু ও মহিষের বড়-ছোট সব ধরনের চামড়া ৫০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে।
চামড়া কেনার মৌসুমি ব্যবসায়ী না পেয়ে স্থানীয় মাদরাসায় দিয়ে দেওয়া হয়েছে চামড়া। বিক্রি করতে না পেরে মাটিতে পুতে ফেলার ঘটনাও ঘটেছে।
আজ রোববার সকালে ফেনীর চামড়ার বড় ব্যবসাকেন্দ্র পাঁচগাছিয়া বাজারে সরেজমিনে গিয়ে এ তথ্য জানা যায়।
পাঁচগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘জেলায় একমাত্র পাঁচগাছিয়া বাজারে ছোট বড় ৪০-৪৫ জন চামড়ার আড়তদার ছিলেন। গত কয়েক বছরে অনেকেই ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে ২০ থেকে ২২ জন আড়তদার আছেন।’
চলতি বছর ১৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় তারা চামড়া কিনছেন বলে জানান তিনি।
পাঁচগাছিয়া বাজারের আড়তদার হেলাল উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গড়ে ৩৫০ টাকা দরে প্রায় চার হাজার চামড়া কিনেছি। ঢাকায় চামড়া বিক্রি করে পাঁচ বছরেও টাকা পাওয়া যায় না।’
একাধিক চামড়া ব্যবসায়ী ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, ঢাকা থেকে চামড়ার কোনো নির্দিষ্ট দর তারা পাননি। এ বছর তারা ছোট-বড় ভেদে গরু-মহিষের প্রতিটি চামড়া ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায় কিনেছেন।
দাগনভূঁঞা উপজেলার খুশীপুর গ্রামের মনির আহম্মদ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমাদের গরুর চামড়া ১০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। পাশের গ্রামের একজন গরুর চামড়া বিক্রি করতে না পেরে, দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে মাটিতে চামড়া পুঁতে ফেলেছেন।’
পরশুরাম উপজেলার আবু ইউছুপ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সারাদিন কোনো মৌসুমি ব্যবসায়ীকে চামড়া কিনতে দেখা যায়নি। বিকেলে আমাদের গরুর চামড়া মাত্র ৫০ টাকায় বিক্রি করেছি।’
সোনাগাজীর বাদুরিয়া গ্রামের আবুল বাসার ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অন্যান্য বছর কুরবানির পশুর চামড়া কিনিতে গ্রামে একাধিক মৌসুমি ক্রেতা আসতো। এ বছর সারা দিনেও চামড়া কেনার জন্য কাউকে পাওয়া যায়নি। তাই, স্থানীয় মাদরাসায় চামড়া দিয়ে দিয়েছি।’
একই বক্তব্য ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কের আতিয়ার সজলের। তিনি নিজে রিকশা ভাড়া দিয়ে স্থানীয় একটি এতিমখানায় চামড়া পৌঁছে দিয়েছেন।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ এলাকার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী মীর হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গড়ে ৩০০ টাকা করে ৫৫টি চামড়া কিনে লোকসানে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছি।’
স্থানীয় একটি মাদরাসার তত্ত্বাবধায়ক নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে গরু ও মহিষের ১৭০টি চামড়া সংগ্রহ করে পাঁচগাছিয়া বাজারের একটি বড় আড়তে নিয়ে গেলে তারা গড়ে ১৭০ টাকা করে দাম দিয়েছেন।’
Comments