চট্টগ্রামে কম দামে চামড়া পাচ্ছেন আড়তদাররা

ছবি: স্টার

সরকারের নির্ধারিত দামের চেয়ে কম দামেই চামড়া কিনতে পারছেন বৃহত্তম চট্টগ্রামের প্রায় সাড়ে তিনশ আড়তদার।

সরকারের নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, এ বছর চট্টগ্রামে গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ২৮ থেকে ৩২ টাকা, যা গত বছর ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। এ বছর ছাগলের লবণযুক্ত চামড়া ১৩ থেকে ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হলেও চট্টগ্রামের কোন আড়তেই তা সংগ্রহ করতে দেখা যায়নি।

হামজারবাগ-আতুরার ডিপো এলাকার মৌসুমি ব্যবসায়ী আবুল কালাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এ বছর চামড়া বর্গফুট হিসাবে কেনা হয়নি। ছোট আকারের গরুর চামড়া ১৫০-২০০, মাঝারি আকারের চামড়া ২০০-৩০০ এবং বড় আকারের গরুর চামরা ৩০০-৪০০ টাকা দরে কেনা হয়েছে। গতবছর চামড়া কিনে ফেলে আসতে হয়েছে বলে এ বছর খুব সতর্কতার সঙ্গে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনেছেন।’

চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন, চট্টগ্রামের ২২টি ট্যানারির মধ্যে ২১টি বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং প্রতিযোগী বাজার তৈরি না হওয়ায় চামড়া কিনতে অনিহা দেখাচ্ছেন আড়তদাররা। তাছাড়া চট্টগ্রামের কাঁচা চামড়ার বাজার ঢাকামুখী হওয়ায় এবং গত কয়েক বছরের বকেয়া আদায় করতে না পারা চামড়ার দাম কমার অন্যতম কারণ।

ছবি: স্টার

বৃহত্তম চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতির তথ্য মতে, এ বছর প্রায় চার লাখ কোরবানির চামড়া সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সমিতির নিবন্ধিত ১৫০ জন এবং অনিবন্ধিত আরও ২০০ জন এ কাঁচা চামড়া মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে ট্যানারিতে সরবরাহ করে। গতবছর প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি কাঁচা চামড়া সংগ্রহ হয়েছিল।

সংগঠনটির সাবেক সভাপতি মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘রোববার দুপুর পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখের মতো চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকি চামড়া মৌসুমি ব্যবসায়ীরা লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করে রেখেছেন, যা দুই-তিন দিনের মধ্যে আড়তে চলে আসবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি বর্গফুটে ৫-১০ টাকা কম দেওয়া হচ্ছে শুধু লবণ বাবদ খরচের জন্য। এ ছাড়া, যথাযথ প্রক্রিয়ায় চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণ না করার কারণে ২০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। আবার চামড়ার সঙ্গে মাংস থাকায় তা পরিষ্কার করতেও বাড়তি শ্রমিক প্রয়োজন হয়। সব মিলিয়ে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দাম বহন করতে হচ্ছে।’

ছবি: স্টার

বৃহত্তম চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতির সভাপতি আবদুল কাদের বলেন, ‘চট্টগ্রামে গত দুই দশকে পরিবেশ দূষণের দায়ে ২১টি ট্যানারি বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে একটি ট্যানারি আছে। যারা এ বছর মাত্র ৫০ হাজার কাঁচা চামড়া কিনবে। বাকি চামড়া বিক্রির জন্য আমাদের ঢাকার ব্যবসায়ীদের উপর নির্ভর করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকার ব্যবসায়ী নিয়মিত দাম পরিশোধ করেন না। গত কয়েক বছর ধরে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের প্রায় ১৫ কোটি টাকা আটকে আছে। বাকিতে চামড়া বিক্রি করতে হয় বিধায় চামড়া সংগ্রহ আগ্রহ হারাচ্ছেন আড়তদাররা।’

Comments

The Daily Star  | English