লেবাননের বিস্ফোরণে হারিয়ে গেল মাদারীপুরের মিজানুরের স্বপ্ন

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে গেছে বাংলাদেশের এক তরুণের স্বপ্ন। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার দিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের মধ্যে আছেন মাদারীপুরের তরুণ মিজানুর রহমান (২৫)।
নিহত মিজানুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে গেছে বাংলাদেশের এক তরুণের স্বপ্ন। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার দিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের মধ্যে আছেন মাদারীপুরের তরুণ মিজানুর রহমান (২৫)।

মিজানুর রহমান মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার শিকার মঙ্গল ইউনিয়নের মিয়ার হাট গ্রামের জাহাঙ্গীর খানের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড়। তিনি বিবাহিত এবং তার তিন বছর বয়সী এক কন্যাশিশু আছে।

পরিবারের ভাগ্যন্নোয়নে তিন বছর আগে ২০১৭ এর সেপ্টেম্বরে লেবাননে যান মিজানুর রহমান। রাজধানী বৈরুতের একটি হোটেলে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন তিনি।

মিজানুর রহমানের মামা বজলুর রহমান খান জানান, গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে বৈরুত থেকে মা ও স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন মিজানুর। মিজানুর জানায়, খাবার খেতে এসেছে। খাবার খেয়ে আবার হোটেলের কাজে যাবেন। ওটাই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার শেষ কথা হবে তা কে জানতো।

বৈরুতে মিজানুরের মামা শ্বশুর শামীম হাওলাদারও কাজ করেন। এ বিস্ফোরণের ঘটনার পর তিনি মিজানুরের মুঠোফোনে ফোন করেন তার অবস্থা জানার জন্য। কিন্তু মুঠোফোনটি বন্ধ পান। পরে তিনি বিষয়টি মিজানুরের বাবাকে জানান। মিজানুরের বাবা এ ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ নিতে বলেন। বুধবার সকাল ৬টার দিকে শামীম হাওলাদার জানান, বৈরুতে ওই বিস্ফোরণে মারা গেছেন মিজানুর।

নিহত মিজানুরের বাবা জাহাঙ্গীর খান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমার ছেলে এক বুক স্বপ্ন নিয়ে সংসারের অভাব দূর করতে লেবানন গিয়েছিল। কিন্তু ভাগ্য তাকে সহায়তা করেনি। আমার কলিজার টুকরো অকালে ঝরে গেল। একটি বিস্ফোরণ তাকে কেড়ে নিল, সঙ্গে সঙ্গে সমাধি ঘটালো একটি স্বপ্নের। আমি ওর মা, স্ত্রী ও সন্তানকে কি বলে সান্তনা দেব সে ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আমার একটাই দাবি আমার ছেলের মরদেহ দেশে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হোক। আমি আমার সন্তানের মরদেহ ফেরত চাই। সন্তানকে দেশের মাটিতে শুইয়ে দিয়ে মনে মনে এ সান্তনা খুঁজে পাবো আমার সন্তান দেশেই আছে, দেশের মাটির সঙ্গে মিশে আছে।’

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শিকার মঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল আলম মৃধা বলেন, ‘মিজানুর একবুক স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে গিয়েছিল। কিন্তু সে স্বপ্নের মৃত্যু হয়েছে। ওর পরিবারকে কিভাবে সান্তনা দেব সে ভাষা আমি খুঁজে পাচ্ছি না। আমি ওর অসহায় পরিবারের পাশে থাকবো যে কোন প্রয়োজনে। ওর মরদেহ দেশের মাটিয়ে ফিরিয়ে আনার জন্য যা যা করার আমি তাই করবো।’

 

Comments

The Daily Star  | English

77.78% students pass HSC, equivalent exams

A total of 77.78 percent students passed this year’s Higher secondary Certificate (HSC) and equivalent examinations

50m ago