দক্ষিণাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ছবি: সুশান্ত ঘোষ

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় এসব এলাকার নিস্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কোথাও কোথাও ১ থেকে ৩ দশমিক ৬ ফুট জোয়ারে পানিতে কৃষি, মৎস্য খামার এমনকি হাট বাজার, রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে।

বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জের অন্তত ৫ ইউনিয়ন ৩ ফুট জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে। জোয়ারের পানিতে মনপুরাসহ ভোলার কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কোথাও কোথাও ঘরবাড়ি স্কুলেও পানি ঢুকেছে। মেঘনা, তেতুলিয়া, বিষখালি, সন্ধ্যা, কীতর্নখোলা, নয়াভাঙানি নদীসহ বেশ কিছু নদীর পানি গত ২ দিন বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া গ্রামের বাসিন্দা ইউসুফ আলী সৈকত বলেন, ‘পূর্ণিমার প্রভাবে মঙ্গলবার থেকে মেঘনায় জোয়ারের পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। জোয়ারে ইতোমধ্যে অনেক মাছের ঘের, ফসলসহ বাড়িঘর ও বাজারে পানি ঢুকে গেছে।’

স্থানীয়রা জানায়, মেহেন্দীগঞ্জের উলানিয়া ইউনিয়নের বাজার, রাস্তা ও দোকানপাট কোথাও দুই থেকে তিন ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে।

পানির স্রোতে অভ্যন্তরীণ সড়ক, কৃষি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে তারা জানায়।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী দিপক দাস বলেন, ‘মেঘনার দৌলতখান পয়েন্টে বিপৎসীমার ২.৪৬ মিটার, নয়াভাঙানির ০.০৮ মিটার, কীতর্নখোলার পানি .৩০ মিটার, মীরগঞ্জের পানি ০.৩ মিটার, বিষখালীর পাথরঘাটা পয়েন্টের পানি ০.২৩ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভাটায় পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও পরবর্তী জোয়ারে পানির উচ্চতা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাসুম জানান, প্রবল বাতাসের চাপ ও পূর্ণিমার কারণে উজানের পানির চাপ যেখানে বেশি বিশেষ করে মেঘনা, তেতুলিয়া নদীতে বিপৎসীমার ১ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত পানি বেড়েছে। সবচেয়ে বেড়েছে মেঘনা নদীতে। এ কারণে বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা, মনপুরা, ভোলার দৌলতখান, মনপুরায় পানি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। ফলে, বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাণ্ডব নদীতে পেয়ারপুর ব্রিজের নিচে ঢাকা-পাতাবুনিয়া লাইনের লঞ্চ পানি বুধবার সন্ধ্যায় আটকে পড়ে। পরে ভাটার টানে লঞ্চটি মুক্ত হয়।’

মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিজুস চন্দ্র দে বলেন, ‘জোয়ারের পানিতে প্রায় ১৬ ইউনিয়ন কম-বেশি প্লাবিত হলেও ৫টি ইউনিয়ন বেশি মাত্রায় প্লাবিত হয়েছে। পানি আরও বাড়লে এসব ইউনিয়নের আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে। শুকনো খাবারসহ জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ৫টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ জোয়ারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, ‘পানিবন্দি মানুষকে কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’

 

 

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

4h ago