প্রাণ ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন না কৃষক সোরহাব হোসেন
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের বনপারিল গ্রামে ৬৭ বছর বয়সী এক কৃষককে চাঁদার দাবিতে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী সোরহাব হোসেন আশঙ্কা করছেন, আবারও তার ওপর হামলা হতে পারে।
সোরহাব বনপারিল গ্রামে স্ত্রী, ছেলের বউ, এক নাতি ও এক নাতনি নিয়ে বসবাস করেন। তার একমাত্র ছেলে মোস্তফা কুয়েত প্রবাসী।
তিনি জানান, বাড়ির পাশে তার তিনটি বড় পুকুর আছে। তিন বছরের জন্য ৫০ হাজার টাকায় তিনি শিকারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা শঙ্কর মাঝিকে পুকুরগুলো লিজ দিয়েছেন। সম্প্রতি স্থানীয় দুর্বত্তরা তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা পরিশোধ না করায় গত ২ আগস্ট দুপুরে দুর্বৃত্তরা তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। এক পর্যায়ে মৃত ভেবে তারা সোরহাবকে ফেলে রেখে যান। স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি তিন দিন চিকিৎসা নিয়েছেন।
সোরহাব দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘চাঁদার টাকা পরিশোধ না করায় স্থানীয় ওহাব আলীর ছেলে মিঠুন (২৪) ও হৃদয় (২২), পান্নু বেপারীর ছেলে মিরাজ (২১), কিয়ামুদ্দিনের ছেলে বাবু (৪২), একু ইসলামের ছেলে আওয়াল (২১), ইউনুছ খানের ছেলে মিজান (২০) ও শাহীন (২২) আমাকে তুলে নিয়ে যায়। তারা আমাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে।’
তিনি আরও জানান, গত ৪ আগস্ট রাতে মানিকগঞ্জ সদর থানায় তিনি লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। আবারও হামলার আশঙ্কায় তিনি আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সোরহাব হোসেনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘চোখের সামনে থেকে স্বামীকে তুলে নিয়ে মারধর করে ওই ছেলেরা। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে বাধাও দেয় তারা। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।’
মোস্তফার স্ত্রী আকলিমা আক্তার বলেন, ‘তারা বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে গেছে। মামলা করলে মেরে লাশ গুম করে ফেলবে, বাড়ি-ঘরে আগুন দেবে বলেছে।’
সোরহাবের ওপর হামলার সময় জেলে সুমন হাওলাদার ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তাকে যখন নৌকায় তুলে নিয়ে যায়, আমরা ভয়ে পাট খেতের ভেতর পালিয়ে ছিলাম।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ব্যস্ততার কারণে সোরহাব হোসেনের অভিযোগটি তদন্ত করার সুযোগ হয়নি। তবে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে হামলাকারীরা দস্যু প্রকৃতির।’
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’
জেলা পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে থানার ১২ পুলিশ সদস্য আইসোলেশনে আছেন। যে কারণে তদন্ত কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’
Comments