নোয়াখালীতে পুকুরে গোসল করাকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডায় যুবককে হত্যা, গ্রেপ্তার ৮

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় পুকুরে গোসল করাকে কেন্দ্র করে ঝগড়ার জের ধরে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারা গেছে এক যুবক।

প্রতিপক্ষ ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করলে আহত অবস্থায় আব্দুল্লাহ আল নোমান হৃদয় (২৪) কে গতকাল শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ঢাকা নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

গতকাল বেলা ২টার দিকে উপজেলার হাজিপুর মিয়ারপুলের দক্ষিণে আসলাম হাজী বাড়ির সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে ১৫ জনের বিরুদ্ধে রাতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাতেই অভিযুক্ত আট আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- চৌমুহনী পৌর হাজিপুর মহল্লার বাসিন্দা সোহাগ (৩৫), নাঈম (২০), মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪২), জাবেদ (২২), বেলাল (১৯), জাহিদ হাসান জীবন (১৯), জহির (২৫) ও ইমরান হোসেন ঝন্টু (১৯)।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌর হাজীপুর এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে আব্দুল্লাহ আল নোমান হৃদয় গতকাল দুপুরে তাদের বাড়ির পুকুরে গোসল করতে যায়। এ সময় সোহাগ, নাঈম, জাবেদসহ কয়েকজনের সঙ্গে গোসল করা নিয়ে হৃদয়ের ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়। এ ঘটনার জের ধরে ঐ দিন বেলা আড়াইটার দিকে ১০-১২ জনের একদল যুবক হাজিপুর মিয়ারপুলের পশ্চিম দিকে আসলাম হাজি বাড়ির সামনে আব্দুল্লাহ আল নোমান হৃদয়ের ওপর হামলা চালায়।

মামলার বাদী ও হৃদয়ের বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘হামলার সময় সালাম ব্যাপারীর ছেলে সোহাগ ও বাহার উদ্দিনের ছেলে ফাহিম, নাঈমসহ ১০-১৫ জন ধারালো অস্ত্র দিয়ে হৃদয়ের পেটে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে আহত করে। এ সময় তারা তাকে কিল, ঘুসি ও লাথি মারে। তাকে উদ্ধার করে বিকেলে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। ঢাকা নেওয়ার পথে রাত ৮টার হৃদয় মারা যায়।’

আব্দুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার নিরপরাধ ভাইকে নির্মম ভাবে ওরা কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সৈয়দ মহি উদ্দিন আব্দুল আজিম বলেন, ‘ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত আব্দুল্লাহ আল মামুন হৃদয় নামের এক যুবককে গতকাল বিকেল ৪টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। তার পেটে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকা নেওয়ার পথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রাতেই তিনি মারা যান।’

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি মো. হারুনুর রশিদ চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে সোহাগকে প্রথম আসামী করে গতকাল রাত ১২টার দিকে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এতে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং পাঁচ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। রাতেই লিখিত অভিযোগকে হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে অভিযান চালিয়ে ১০ আসামীর মধ্যে আট জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে যুবক হত্যার ঘটনা খুবই দুঃখ জনক। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই পুলিশ ছাড় দিবে না। এই হত্যা মামলার ১০ আসামীর মধ্যে আট জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপরাধী যেই হোক না কেনো তাকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি দিতে নোয়াখালী পুলিশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh tops sea arrivals to Italy

The number of Bangladeshis crossing the perilous Mediterranean Sea to reach Italy has doubled in the first two months this year in comparison with the same period last year.

8h ago