মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী প্রথম অ-শ্বেতাঙ্গ নারী কমলা হ্যারিস

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনে ডেমোক্রেট দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কমলা হ্যারিস। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী কমলা ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে লড়তে যাচ্ছেন। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত সিনেটর কমলা হ্যারিসকে রানিং মেট হিসেবে ঘোষণা করেছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনেও সোচ্চার ছিলেন ভারতীয় মা ও জামাইকান বাবার মেয়ে কমলা।

বিবিসি জানায়, আত্মজীবনীতে নিজের নামের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘এর অর্থ পদ্মফুল, যা ভারতীয় সংস্কৃতিতে তাৎপর্যের প্রতীক। একটি পদ্ম নদীর তলদেশে বেড়ে ওঠে। একসময় এর ফুলগুলো পানির উপরে উঠে যায়। তবে, শিকড় নদীর তলায় দৃঢ়ভাবে থাকে।’

কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান শিল্পীদের সংগীত আয়োজনে মুখর এক বাড়িতে বেড়ে ওঠেন কমলা ও তার বোন মায়া। বাবা-মা দুজনই ছিলেন সংগীত অনুরাগী।

মা শ্যামলা গোপালান ও বাবা ডোনাল্ড হ্যারিসের যখন বিচ্ছেদ হয় তখন কমলার বয়স পাঁচ বছর। মা শ্যামলা গোপালান একজন ক্যান্সার গবেষক ছিলেন।

দুই মেয়েকে একাই বড় করেন তিনি। শ্যামলা, কমলা ও মায়া- এই তিন জন ‘শ্যামলা অ্যান্ড দ্য গার্লস’ নামে পরিচিত। দুই মেয়ে যেন তাদের শেকড় সম্পর্কে জানতে পারে মা তা নিশ্চিত করেছেন।

আত্মজীবনীতে কমলা লেখেন, ‘আমার মা খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি দুজন অ-শ্বেতাঙ্গ মেয়েকে বড় করছেন। তিনি জানতেন, তার বেছে নেওয়া দেশটি আমাকে আর মায়াকে কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবেই দেখবে। তিনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন যাতে আমরা আত্মবিশ্বাস ও গর্ব নিয়েই বেড়ে উঠি।’ 

গত বছর ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, ‘কমলা তার ভারতীয় সংস্কৃতি গ্রহণ করে বড় হয়েছেন। তবে গর্বের সঙ্গে আফ্রিকান-আমেরিকান জীবনযাপন করেছেন তিনি।’

২০১৫ সালে সিনেট নির্বাচনে লড়াইয়ের সময় ইকোনোমিস্ট ম্যাগাজিন তাকে ‘একজন ভারতীয় ক্যান্সার গবেষক ও জামাইকান বংশোদ্ভুত অর্থনীতির অধ্যাপকের মেয়ে’ হিসেবে বর্ণনা করে। তিনিই প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান নারী যিনি ক্যালিফোর্নিয়ার প্রথম এশিয়ান অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নির্বাচিত হন।

তবে, নিজের শিকড় নিয়ে গর্বিত হলেও তা আঁকড়ে ধরেননি ৫৫ বছর বয়সী এই সিনেটর। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে নিজেকে ‘আমেরিকান’ হিসেবেই তুলে ধরেছেন সবসময়। ২০১৪ সালে আইনজীবী ডগলাস এমফোফের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কমলা। ভারতীয় ও ইহুদি ঐতিহ্যের সঙ্গে মিল রেখেই বিয়ে করেন তারা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন নির্বাচনে বর্তমানে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের বিপরীতে একজন আফ্রিকান-আমেরিকান রাজনীতিবিদ হিসেবে শক্ত অবস্থান ধরে রাখবেন কমলা হ্যারিস। যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় ও

দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যেও পূর্ণ গ্রহণযোগ্যতা পাবেন তিনি।

ইউএস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কর্মী শেখর নরসিমহন বলেন, ‘তিনি মিশ্র সম্প্রদায় থেকে উঠে আসা একজন নারী। অনেকগুলো সম্প্রদায়ের মানুষকে তিনি আকৃষ্ট করবেন। জো বাইডেনের পক্ষে নির্বাচনে জয়লাভ করতে সহায়তা করবেন তিনি। তিনি সত্যই স্মার্ট। ভারতীয়-আমেরিকানরা তাকে নিয়ে গর্ব করে।’

Comments

The Daily Star  | English
Mustafa Zaman Abbasi no more

Mustafa Zaman Abbasi no more

Mustafa Zaman Abbasi, a revered Bangladeshi musicologist, author, and television figure, has passed away at the age of 87. He died at 7 am on Saturday morning at a hospital in Banani. His daughter, Sharmin Abbasi, confirmed the news.

19m ago