‘কর্তৃপক্ষের চাপে’ করোনা আক্রান্ত নার্স ডিউটি করছেন লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে
কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েও সিনিয়র সহকারী নার্স শারমিন আফরোজ ডিউটি চালিয়ে যাচ্ছেন লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা ব্যক্তিদের যারা এ বিষয়টি বুঝতে পারছেন তারা তড়িঘড়ি হাসপাতাল ছেড়ে যাচ্ছেন। যারা জানছেন না তারা নীরবে ঝুঁকির মধ্যে করোনা আক্রান্ত নার্সের সেবা নিচ্ছেন।
করোনা আক্রান্ত নার্স শারমিন আফরোজের দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘গত ২৬ জুলাই নমুনা দিলে ২ আগস্ট রিপোর্টে কোভিড-১৯ পজিটিভ আসে। ৮ আগস্ট পর্যন্ত বাড়িতে ছিলাম। কিন্তু, কর্তৃপক্ষের চাপে ৯ আগস্ট থেকে হাসপাতালে যোগা দেই।’
তার শরীরে এখনো জ্বর, হাচি-কাশি লেগেই আছে, শরীরের ব্যথা এখনো কমেনি বলে জানালেন নার্স শারমিন আফরোজ।
’এই মুহূর্তে আমার বাড়িতে থেকে বিশ্রাম নেওয়া দরকার, চিকিৎসা নেওয়া দরকার। কিন্তু, কর্তৃপক্ষের চাপে আমাকে নিয়মিত ডিউটিতে আসতে হচ্ছে,’ এমনটি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সচেতন থেকে, সতর্কভাবে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ডিউটি করছি।’
হাসপাতালে শিশুর জন্য চিকিৎসাসেবা নিতে আসা অভিভাবক মমিনুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বাচ্চাকে রেখে দুই দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর জানতে পারি নার্স করোনা আক্রান্ত। তাই দেরি না করে বাচ্চাকে নিয়ে চলে আসি।’
করোনা আক্রান্ত নার্স দিয়ে শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্বপালন শিশুদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির কারণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। করোনা আক্রান্ত কোনো নার্স কেন, কোনো স্বাস্থ্যকর্মীই কর্মস্থলে আসতে পারবেন না।’
করোনা আক্রান্ত নার্স শিশু ওয়ার্ডে কিভাবে ডিউটি করছে এবং কেনো তাকে আসতে বলা হয়েছে সে বিষযে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় বিস্ময় প্রকাশ করে ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই হতে পারে না। কোভিড-১৯ পজিটিভ কোনো নার্স ডিউটিতে আসবে, তাও আবার শিশু ওয়ার্ডে!’
‘এটা মারাত্মকভাবে ঝুঁকির কারণ হতে পারে’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তড়িত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
Comments