ম্যান সিটিকে চমকে দিয়ে সেমিতে লিঁও
প্রথমার্ধে গোল হজম করার পর দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি সময়ে সমতায় ফিরল ম্যানচেস্টার সিটি। কিন্তু তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল বড়সড় চমক। শেষদিকে আট মিনিটের ব্যবধানে দুবার পেপ গার্দিওলার শিষ্যদের জালে বল জড়াল অলিম্পিক লিঁও। ২০০৯-১০ মৌসুমের পর আবারও উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিল ফরাসি ক্লাবটি।
শনিবার রাতে আসরের শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যান সিটিকে ৩-১ গোলে হারাল লিঁও। স্তাদিও হোসে আলভালাদেতে দলটির হয়ে জোড়া গোল করেন বদলি নামা মৌসা দেম্বেলে। প্রথম গোলটি এসেছিল ম্যাক্সওয়েল করনেতের পা থেকে। সিটিজেনদের হয়ে ব্যবধান কমান কেভিন ডি ব্রুইন।
শক্তিশালী ম্যান সিটিকে এদিন পাওয়া যায়নি চেনা ছন্দে। প্রথমার্ধে সাদামাটা ফুটবল খেললেও দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের গুছিয়ে নিতে শুরু করেছিল দলটি। কিন্তু ধারার বিপরীতে গোল আদায় করে নিয়ে শেষ হাসি হাসে লিঁও।
অধিকাংশ সময়ে বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণেও প্রাধান্য দেখায় সিটি। তারা মোট ১৮টি শট নেয়, যার সাতটি ছিল লক্ষ্যে। কিন্তু গোলরক্ষক ও ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতা এবং প্রতিপক্ষ লিঁওর জমাট রক্ষণের সমন্বয়ে হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।
২৪তম মিনিটে ম্যাচের প্রথম ভালো সুযোগটি থেকে গোল আদায় করে নেয় লিঁও। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের দিকে এগোতে থাকেন কার্ল তোকো একাম্বি। তাকে রুখতে সামনে এগিয়ে আসেন গোলরক্ষক এদারসন। একাম্বি শট নেওয়ার আগেই অবশ্য দারুণ ট্যাকল করেন এরিক গার্সিয়া। কিন্তু দুর্ভাগ্য সিটির। আলগা বল পেয়ে যায় করনেত। বাঁ পায়ের বাঁকানো শটে নিশানা ভেদ করেন আইভরিকোস্টের ফরোয়ার্ড।
প্রথমার্ধের শেষদিকে সমতায় ফিরতে পারত সিটি। ৪২তম মিনিটে রহিম স্টার্লিংয়ের পাসে ডি-বক্সের ভেতরে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন রদ্রি। কিন্তু তার দুর্বল শট সহজেই লুফে নেন লিঁও গোলরক্ষক অ্যান্থনি লোপেস।
বিরতির পর চাপ বাড়ায় ইংলিশ ক্লাবটি। সেই ধারাবাহিকতায় ৬৯তম মিনিটে স্কোরলাইন ১-১ করেন বেলজিয়ামের মিডফিল্ডার ডি ব্রুইন। স্টার্লিংয়ের বাড়ানো বলে পেনাল্টি মাপা শটে দূরের পোস্টে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
শক্তির বিচারে অনেক এগিয়ে থাকা সিটি ফের পিছিয়ে পড়ে ৭৭তম মিনিটে। মাঝমাঠে তারা বল হারানোর পর লিঁওর হোউসেম আউয়ার রক্ষণচেরা পাসে খুঁজে নেন দেম্বেলেকে। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের পেছনে রেখে অনেকখানি দৌড়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে জাল কাঁপান তিনি। এদারসন পা বাড়িয়ে বল স্পর্শ করলেও জাল অক্ষত রাখতে পারেননি।
৮৬তম মিনিটে আবার সমতা টানতে পারত সিটি। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে ফাঁকা জালে বল পাঠাতে পারেননি ইংলিশ ফরোয়ার্ড স্টার্লিং। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়েল জেসুস ছোট ডি-বক্সের মধ্যে ক্রস করলেও পোস্টের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন তিনি।
এই হতাশা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই সিটির জালে তৃতীয়বার বল জড়ায় লিঁও। তাতে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় সিটির। মাঝমাঠে সিটি ফের বল হারালে আক্রমণে গিয়ে শট নেন আউয়ার। কিন্তু ভুল করে ফেলেন এদারসন। সহজ বল লুফে নিতে ব্যর্থ হন তিনি। ভুলের ফায়দা তুলে নেওয়ার কাজটা নির্বিঘ্নে সারেন ফরাসি স্ট্রাইকার দেম্বেলে।
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বায়ার্ন মিউনিখের মুখোমুখি হবে লিঁও। আগামী বুধবার রাতে মাঠে গড়াবে ম্যাচটি।
Comments