মেঘনায় ২ লাইটার জাহাজডুবি, ২৭ নাবিক জীবিত উদ্ধার
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় উত্তাল মেঘনার প্রবল স্রোত ও ঢেউয়ের মুখে পড়ে মালবাহী এমভি সিটি-১৪ ও এমভি আক্তার বানু-১ জাহাজ ডুবে যাওয়ার ঘটনায় ২৭ নাবিককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার সকালে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচর সংলগ্ন ঠেঙ্গারচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে জাহাজের প্রায় ৪ হাজার মেট্রিকটন গম ও চিনি পানির নিচে তলিয়ে যায়।
উদ্ধারকৃত নাবিকদের মধ্যে এমভি সিটি জাহাজের ১৩ নাবিককে চট্টগ্রামে এবং এমভি আক্তার বানুর ১৪ নাবিককে রোববার বিকেলে উদ্ধার করে হাতিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
হাতিয়া থানার ওসি মো. আবুল খায়ের রোববার বিকেলে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
এমভি আক্তার বানু-১ এর উদ্ধার হওয়া ক্যাপ্টেন জিয়াউল করিম বলেন, ‘আবুল খায়ের গ্রুপের ২ হাজার মেট্রিক টন গম বোঝাই করে ১৪ জন নাবিক নিয়ে শুক্রবার রাত ১টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। জাহাজটি হাতিয়া উপজেলার ভাসানচর ও ঠেঙ্গারচর এলাকার মাঝামাঝি স্থানে পৌঁছালে শনিবার সকাল ১০ টার দিকে জাহাজের একটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। অপর ইঞ্জিনটি সচল থাকলেও প্রবল স্রোতে ও ঢেউয়ের মুখে পড়ে চালক জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং গভীর পানিতে তলিয়ে যায়। জাহাজের নাবিকরা রিং বয়া, গ্যাপলাইট, লাইফ লাইনিং ভর করে ২৪ ঘণ্টা পানির মধ্যে সাঁতার কাটে। রোববার বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত মেঘনা নদীতে মাছ ধরা জেলে নৌকা তাদেরকে উদ্ধার করে হাতিয়া ভূখণ্ডে নিয়ে আসে। খবর পেয়ে হাতিয়া থানা পুলিশ আহত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া নাবিকদেরকে বিকেল ৪টায় হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে চিকিৎসাসেবা দেয়।’
হাতিয়া থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক রিয়াদুল হাসান বলেন, ‘জেলেদের সহায়তায় ডুবে যাওয়া জাহাজ এমভি আক্তার বানুর-১৪ নাবিককে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে হাতিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।’
হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহাদি হাসান মঞ্জু বলেন, ‘জাহাজডুবির ঘটনায় উদ্ধার হওয়া ১৪ নাবিককে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ সময় পানিতে থাকায় অনেকে সর্দি, কাশি ও ঠাণ্ডা জনিত সমস্যায় পড়েছেন। তবে সবাই শঙ্কাযুক্ত।’
এর আগে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছেড়ে আসা চিনি তৈরির কাঁচামাল বোঝাই এমভি সিটি-১৪ নামের আরও একটি জাহাজ ১৩ নাবিক নিয়ে শনিবার সকালে হাতিয়া উপজেলার ভাসানচর এলাকায় উত্তাল মেঘনায় ডুবে যায়। এ সময় পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় রূপসী-১ একটি লাইটার জাহাজ ডুবে যাওয়া জাহাজের ১৩ নাবিককে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে।
হাতিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের মালবাহী দুইটি জাহাজ ডুবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘উত্তাল নদীতে অতিরিক্ত মাল বোঝাই করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে এসব জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকালে ডুবে যাওয়া জাহাজের নাবিকদেরকে জেলেরা উদ্ধার করেছে।’
আরও পড়ুন:
Comments