এবার টেকনাফ থানার ২৭ পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা
টেকনাফ মডেল থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ পুলিশের ২৭ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে আদালতে। দাবি মতো টাকা না দেওয়ায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলে আদালতে দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করেছেন বাদী।
আজ মঙ্গলবার বিকেল তিনটায় নিহত সাদ্দাম হোসেনের মা গুলচেহের ফৌজদারি এজাহারটি টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করেন। বিচারক মো. হেলাল উদ্দীন ফৌজদারি এজাহারটি আমলে নিয়ে তা তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) আদেশ দিয়েছেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী ইনসাফুর রহমান এইসব তথ্য জানিয়েছেন।
মামলায় হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মশিউর রহমানকে প্রধান আসামি ও ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে। পুলিশের বাইরে হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার নূরুল আমিন প্রকাশ নুরুল্লাহকেও আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, ‘গত ৪ জুলাই টেকনাফ হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মশিউর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার এলাকার সাদ্দাম হোসেন ও তার ভাই জাহেদ হোসেনকে বাড়ির অদূরে রাস্তা থেকে আটক করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। তাদের ছাড়িয়ে আনতে ফাঁড়িতে যান গুলচেহের। দুই ছেলের মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা দাবি করেন ফাঁড়ির ইনচার্জ মশিউর রহমান। পাঁচ লাখ টাকায় দফারফা হয়। ওই দিনই তিন লাখ টাকা মশিউর রহমানের হাতে দেন গুলচেহের। বাকি দুই লাখ পরদিন মশিউর রহমানের কথা মতো তার পাঠানো বাহক ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার নুরুল আমিনের হাতে দেন। মশিউর রহমান পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে জাহেদ হোসেনের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় একটি মামলা করে আদালতে সোপর্দ করে। ৭ জুলাই রাত ১০টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে ৩০০ গজ দূরে একটি জায়গায় এনে সাদ্দাম হোসেন ও অন্য একজনকে গুলি করে পুলিশ। এতে গুরুতর আহত হয় সাদ্দাম হোসেন। পরে পুলিশ তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
‘ফাঁড়ির ইনচার্জ মশিউর রহমান, সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও মামলার তিন নম্বর আসামি আরিফুর রহমানের পরামর্শ ও নির্দেশক্রমে অন্যান্য আসামিরা সবাই পরস্পর যোগসাজশ করে সাদ্দাম হোসেনকে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করেছেন। সাদ্দামকে মারার কিছুদিন আগে একইভাবে তাদের বাবা সুলতান আহমদ প্রকাশ বাদশাকেও পুলিশ বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা করেছে। কিছুদিনের ব্যবধানে স্বামী ও সন্তানকে হারিয়ে মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন বাদী। পুলিশের হুমকির কারণে মামলা করতে দেরি হলো।’
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. আরিফুর রহমান, এসআই সুজিত চন্দ্র দে, এসআই অরুন কুমার দে, এসআই মো. নাজিম উদ্দিন ভুইয়া, এসআই নাজিম উদ্দিন, এসআই কামরুজ্জামান, এএসআই আমির হোসেন, এএসআই কাজি সাইফুদ্দিন, এএসআই নাজিম উদ্দিন, এএসআই মাঈন উদ্দিন, এএসআই মাযহারুল ইসলাম, এএসআই নঈমুল হক, এএসআই মিশকাত উদ্দিন, এএসআই রাম চন্দ্র দাশ, সাগর দেব, রুবেল শর্মা, আবু হানিফ, মো. শরীফুল ইসলাম, মো. আজিজ, দ্বীন ইসলাম, মো. বোরহান, মো. জসিম উদ্দিন, আব্দু শুক্কুর, শেকান্দর, মহি উদ্দিন ও হ্নীলা ইউনিয়নের দফাদার নুরুল আমিন প্রকাশ নুরুল্লাহ।
Comments