সম্পাদকীয়

ঠাণ্ডা মাথায় খুন করে বলা হচ্ছে ক্রসফায়ার

একটি গুরুতর বিষয়ে পুলিশের উদাসীনতায় আমরা হতবাক। ক্রসফায়ারের সংস্কৃতি আমাদের সমাজের মূল্যবোধে আঘাত করেছে, সুশাসনের মূল স্তম্ভ আইনের শাসনে আঘাত করছে এবং মানুষের সবচেয়ে বড় মৌলিক অধিকারে আঘাত করেছে। উদ্বেগের বিষয় হলো– এই ঘৃণ্য ও অমানবিক কাজের অনুশীলন পুরো পুলিশ বাহিনীর মাঝেই ছড়িয়ে পরেছে।
ছবি: স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

একটি গুরুতর বিষয়ে পুলিশের উদাসীনতায় আমরা হতবাক। ক্রসফায়ারের সংস্কৃতি আমাদের সমাজের মূল্যবোধে আঘাত করেছে, সুশাসনের মূল স্তম্ভ আইনের শাসনে আঘাত করছে এবং মানুষের সবচেয়ে বড় মৌলিক অধিকারে আঘাত করেছে। উদ্বেগের বিষয় হলো– এই ঘৃণ্য ও অমানবিক কাজের অনুশীলন পুরো পুলিশ বাহিনীর মাঝেই ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রথমে কাউকে সন্ত্রাস বা রাষ্ট্রবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অপরাধে (যদিও তা সত্য কিনা তা নিশ্চিত করে বলা যায় না) গ্রেপ্তার এবং তারপর ক্রসফায়ার বা ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি করা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর এক সহজ কাজে পরিণত হয়েছে। এমন অবস্থায় কোনো প্রশাসনেরই সন্তুষ্ট হওয়া উচিত না। কোনো সমাজই এমন পরিস্থিতিতে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারে না।

আমরা অবাক হই এটা চিন্তা করে যে, পুলিশ এবং প্রশাসন এমন হত্যাকাণ্ডের পরিণতি সম্পর্কে অবগত কিনা। প্রায় প্রতিদিনই এমন মৃত্যুর খবর আসে। আর খবরের সঙ্গে মৃত্যুর কারণ হিসেবে আসে একই বর্ণনা। নিহতদের পরিবার বা পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে সে বর্ণনার কোনো সামঞ্জস্য থাকে না। সম্প্রতি কক্সবাজারের চকরিয়ায় একজন প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে পুলিশের গুলিতে। পরিবারের ভাষ্যমতে, ফোনে দাবি করা ৫০ লাখ টাকা দিতে না পারায় তাকে হত্যা করে ইয়াবা চোরাকারবারি বলে প্রচার করছে পুলিশ। একই জায়গায়, একই ভাবে হত্যা করা হয়েছে রিকশাচালক হাসানকে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মতে, ইয়াবা চোরাকারবারি হাসানের পরিবর্তে একই নামের রিকশাচালক হাসানকে হয়তো তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।

আমরা অবাক হচ্ছি, পুলিশ প্রশাসন তাদের কর্মীদের এমন অপরাধমূলক কাজে বাধা দিতে পারছে না কেন? এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ঘটনার খুব কমই তদন্ত করা হয়েছে। যাও হয়েছে, সেখানেও আইনের সীমা অতিক্রম করা পুলিশ সদস্যদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে খুবই কম।

এই ধরনের হত্যাকাণ্ড অব্যাহত থাকলে সাধারণ জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পারবে না পুলিশ। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ পেতে পুলিশ প্রশাসনের জেগে উঠতে হবে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরও এ বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

India extends export curbs on onions until Mar 31 

India has extended the ban on the exports of onion till March next year with a view to increase availability in domestic markets and to keep prices in check, according to a notification issued by the Directorate General of Foreign Trade yesterday. 

15m ago