আগস্টের শেষে আবারও বন্যার শঙ্কা, দিশেহারা নদীপাড়ের মানুষ

এখনও বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে রাস্তা। তাই কলা গাছের ভেলায় যাতায়াত করছে মানুষ। ছবি: এস দিলীপ রায়

আগস্টের শেষ নাগাদ আবার একটি বন্যা হতে পারে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের এমন আগাম বার্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমারপাড়ের লাখো মানুষ।

বৃষ্টিপাত ও উজানে ভারত থেকে আসা পানিতে অল্প অল্প করে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। যে কোনো সময় পানি আকস্মিকভাবে বিপৎসীমার উপরে চলে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে নদীপাড়ের মানুষ শঙ্কিত।

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী জোড়গাছ এলাকার বানভাসি নাদের আলী (৬২) বলেন, ‘গেল কয়েকদিনের চেয়ে আজ বুধবার সকাল থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে। আমরা জানতে পেরেছে আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ আরও একটি বন্যা আসতে পারে। তাই সবার মাঝে ভীতি দেখা দিয়েছে। আমরাও প্রস্তুতি নিয়ে আছি। এবার বন্যার পানি বাড়িঘরে ঢোকার আগেই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাবে।’

চর রাজিবপুর উপজেলার চর কোদালকাটি এলাকার বানভাসি কৃষক শেখের আলী (৬০) বলেন, ‘অনেক কষ্টে আমনের চারা সংগ্রহ করে খেতে লাগিয়েছি। আবার যদি বন্যা হয় আমন ধানের খেত ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং আর কোনোভাবে আমনের চারা সংগ্রহ করে লাগানো সম্ভব হবে না।’

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার তিস্তাপাড় দক্ষিণ বালাপাড়া গ্রামের বানভাসি কৃষক আক্কেল আলী (৫৬) বলেন, ‘এমনিতে গ্রামের রাস্তা-ঘাট এখনও বানের পানির নিচে তলিয়ে আছে। কলা গাছের ভুড়ায় করে যাতায়াত করতে হচ্ছে। তার উপর আবারও বন্যার খবরে বিচলিত হয়ে পড়েছি। এবার বন্যার কবলে পড়লে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে। বিশেষ করে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হবে।’

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি উঠানামা করছে। নদ-নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে। চলতি মাসের শেষ দিকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা আছে।’

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রমজান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি সাধারণ প্রবাহে রয়েছে। রাতে পানি বাড়লেও সকালে তা নেমে যাচ্ছে। তবে চলতি মাসের শেষ নাগাদ বৃষ্টি ও উজানের পানিতে নদীর পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির আগাম সতর্কবার্তা আছে আমাদের কাছে। এমন পরিস্থিতি দেখা দিলে দুইদিন আগে নদীপাড়ের মানুষকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Pilots faked flying records

CAAB inquiry finds, regulator yet to take action

9h ago