পরিসংখ্যানে পিএসজি-বায়ার্ন ফাইনালের লড়াই
বায়ার্ন মিউনিখের ষষ্ঠ নাকি প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) প্রথম? কার হাতে শোভা পাবে পরম আকাঙ্ক্ষিত শিরোপা? রবার্ট লেভানডভস্কির নাকি নেইমারের?
উত্তর জানা যাবে রবিবার। বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত একটায় পর্তুগালের লিসবনে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ২০১৯-২০ মৌসুমের ফাইনালে নামবে দল দুটি।
এবারের আসরে অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটছে হট ফেভারিট বায়ার্ন মিউনিখ। আর চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে সামর্থ্যের ছাপ রেখেছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই।
ফাইনালের রোমাঞ্চে বায়ার্ন
কোচ হ্যান্সি ফ্লিকের বায়ার্ন মিউনিখের শক্তির জায়গা নিঃসন্দেহে তাদের আক্রমণভাগ। দশ ম্যাচে ৪২ গোল তার প্রমাণ রাখে। মুড়ি-মুড়কির মতো গোল করে চলা রবার্ট লেভানডভস্কির পাশাপাশি সার্জ ন্যাব্রি-থমাস মুলাররাও জালে বল পাঠাতে সিদ্ধহস্ত।
তবে মাঠের অনেক উঁচুতে উঠে রক্ষণদেয়াল সাজানোর কারণে প্রতিপক্ষের পাল্টা-আক্রমণে ভুগতে দেখা গেছে জার্মান চ্যাম্পিয়নদের। সেমিফাইনালে অলিম্পিক লিঁওর বিপক্ষে ম্যাচের শুরুতে অন্তত তিনবার গোল হজম করা থেকে বেঁচে গেছে তারা।
ফাইনালে নেইমার-কিলিয়ান এমবাপেদের গতির বিপক্ষে রক্ষণ জমাট না রাখলে খেসারত দিতে হতে পারে বায়ার্নকে।
* ১১তম বারের মতো উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ/ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে বায়ার্ন।
* আগের দশ ফাইনালের পাঁচটিতে জিতেছে বাভারিয়ানরা, হেরেছেও সমানসংখ্যক ম্যাচে।
* পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে এই প্রতিযোগিতার শিরোপাজয়ী ক্লাবগুলোর তালিকায় যৌথভাবে চতুর্থ স্থানে আছে বায়ার্ন। প্রথম তিনটি স্থান যথাক্রমে রিয়াল মাদ্রিদ (১৩), লিভারপুল (৭) ও এসি মিলানের (৬) দখলে।
* ২০১২-১৩ মৌসুমের পর দ্বিতীয়বারের মতো ‘ট্রেবল’ জয়ের সুযোগ রয়েছে জার্মান ক্লাবটির সামনে। ইতোমধ্যে বুন্ডেসলিগা ও জার্মান কাপের শিরোপা ঘরে তুলেছে তারা।
শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে পিএসজি
নেইমার-এমবাপে-অ্যাঙ্গেল দি মারিয়াকে নিয়ে পিএসজির আক্রমণভাগও দুর্ধর্ষ। এই ত্রয়ী নিজেদের দক্ষতা দেখিয়েছেন কোয়ার্টার ও সেমিফাইনালে। কোচ টমাস টুখেলের দলের রক্ষণভাগের কথাও আলাদা করতে বলতে হয়। এখন পর্যন্ত মাত্র পাঁচ গোল হজম করেছে তারা।
তবে বায়ার্নের বিপক্ষে জাল অক্ষত রাখা সহজ হবে না পিএসজির জন্য। বাভারিয়ানদের প্রেসিং ফুটবলের বিপরীতে নিজেদের সবটুকু নিংড়ে দেওয়ার মন্ত্র নিয়েই নামতে হবে দলটির মাঝমাঠ ও রক্ষণভাগকে।
* প্রথমবারের মতো উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ/ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে উঠেছে পিএসজি।
* ৪১তম দল হিসেবে ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব আসরের ফাইনালের টিকিট পেয়েছে প্যারিসিয়ানরা। ২৩তম দল হিসেবে শিরোপা জেতার হাতছানি তাদের সামনে।
* এই প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠা শেষ ছয়টি ক্লাব শিরোপা ছুঁয়ে দেখতে ব্যর্থ হয়েছে। অভিষেক ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সবশেষ নজির গড়েছিল বরুসিয়া ডর্টমুন্ড, ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে।
* ‘ট্রেবল’ জয়ের সুযোগ রয়েছে ফরাসি ক্লাবটির সামনেও। ইতোমধ্যে লিগ ওয়ান ও ফরাসি কাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরার স্বাদ নিয়েছে তারা।
২০১৯-২০ উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দুই দলের পারফরম্যান্স
চলতি প্রতিযোগিতায় যে ক্লাবকে সামনে পেয়েছে, তাদের সবগুলোকে পুরোপুরি তছনছ করে দিয়েছে বায়ার্ন। দশ ম্যাচের প্রতিটিতে জয় তুলে নেওয়ার পথে কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলোনার মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষকেও ৮-২ গোলে বিধ্বস্ত করেছে তারা।
শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে জায়গা করে নেওয়ার পথে পিএসজিও দেখিয়েছে দুর্দান্ত নৈপুণ্য। কোয়ার্টার ফাইনালে আতালান্তার বিপক্ষে শেষ মুহূর্তের নাটকীয় জয়ের পর সেমিফাইনালে আরবি লাইপজিগ পাত্তাই পায়নি তাদের কাছে।
বায়ার্ন মিউনিখ
ম্যাচ- ১০
জয়- ১০
ড্র-০
হার- ০
গোল (পক্ষে)- ৪২
গোল (বিপক্ষে)- ৮
পিএসজি
ম্যাচ- ১০
জয়- ৮
ড্র- ১
হার- ১
গোল (পক্ষে)- ২৫
গোল (বিপক্ষে)- ৫
মুখোমুখি লড়াইয়ে কে এগিয়ে?
অতীত পরিসংখ্যানে পিএসজির চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও বায়ার্নের এবারের দলটি দুর্বার।
মুখোমুখি
ম্যাচ- ৮
পিএসজির জয়- ৫
বায়ার্নের জয়- ৩
ড্র- ০
পিএসজির গোল- ১২
বায়ার্নের গোল- ১১
* সবগুলো লড়াই উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে।
সবশেষ সাক্ষাৎ
পিএসজি ৩-০ বায়ার্ন
বায়ার্ন ৩-১ পিএসজি
* চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ২০১৭-১৮ মৌসুমের গ্রুপ পর্বে।
Comments