বাগেরহাটে অতিবৃষ্টি ও জোয়ারে ১৭ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি
বাগেরহাটে অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানির কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় সবজিসহ অন্যান্য ফসল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী এই ক্ষতির পরিমাণ ১৭ কোটি ১৮ লাখ ৯২ হাজার টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ২৫ হাজার ২৬ জন।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, বাগেরহাটের ৯ উপজেলার ৫২ হাজার ৩০৯ হেক্টর জমিতে আউস, রোপা আমন, পান, আখ, মরিচসহ অন্যান্য ফসলের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ফসল। তার মধ্যে ৬৯৭ হেক্টর জমিতে আছে আমনের বীজতলা।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, তাদের দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে এই উপকূলীয় অঞ্চলে টিকে থাকতে হয় কিন্তু, অন্যবার প্রস্তুতি নেওয়ার পূর্বাভাস থাকত, যা এবার ছিল না। এবার তেমন কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই অতিবৃষ্টি ও বানের পানিতে সবজি, বিশেষ করে মাছও ভেসে গেল। তারা এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহজ শর্তে ঋণ ও সরকারি সহায়তার দাবি করেছেন।
বাগেরহাটের চিতলমারীর কৃষক রাজু বলেন, ‘আমরা ঘেরের পাড়ে শসা, করলা, মরিচ, টমেটো চাষ করেছি। এগুলো বিক্রি করে সবাই লাভবান হচ্ছিলাম। কিন্তু, হঠাৎ করে টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে সব সবজি গাছের শিকড় পচে গাছ মরে গেছে। ফলে, আমরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।’
বাগেরহাটের কচুয়ার ভান্ডারকোলা গ্রামের কৃষক অসীম মণ্ডল বলেন, ‘আমার ঘেরের পাড়ে শসা, টমেটো ও মরিচ গাছ লাগিয়েছিলাম। কিন্তু, হঠাৎ বন্যায় গাছের গোড়ায় পানি জমে সব মারা গেছে। আবার নতুন করে জমি তৈরি করে ফসল লাগানো কঠিন হয়ে যাবে।’
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার বিষখালী গ্রামের কৃষক নির্মল দাস বলেন, ‘চোখের সামনে গা গুলো সব মারা গেল। এই অবস্থা আমিসহ প্রায় সব কৃষকের। সরকারি সহায়তা ছাড়া পুনরায় চাষ শুরু করা সম্ভব নয়।’
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রঘুনাথ কর বলেন, ‘বাগেরহাটের ৫২ হাজার ৩০৯ হেক্টর জমির ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এতে মোট ক্ষতির পরিমাণ ১৭ কোটি ১৮ লাখ ৯২ হাজার টাকা। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বীজ, সার এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে, যাতে কৃষকরা সরকারি প্রণোদনা পান।’
Comments