‘হত্যার শিকার’ কিশোরী জীবিত উদ্ধার: ৩ আসামির জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন

নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করে তিন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর, কিশোরী জীবিত উদ্ধারের ঘটনায় তাদের দেওয়া জবানবন্দি প্রত্যাহারে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করে তিন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর, কিশোরী জীবিত উদ্ধারের ঘটনায় তাদের দেওয়া জবানবন্দি প্রত্যাহারে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত তা গ্রহণ করে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন।

একই সঙ্গে আদালত তিন আসামির জামিন ও কিশোরীর স্বামীর রিমান্ড আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. রোকন উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ, রকিব ও খলিলুর রহমান আদালতে তাদের দেওয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালত ওই আবেদন গ্রহণ করে নথিভুক্ত করার আদেশ দেন।

তিনি বলেন, ‘অভিযুক্তরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদনে উল্লেখ করেছেন তাদের রিমান্ডে ভয় ভীতি দেখিয়ে এ স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে স্বীকারোক্তি দিলে তাদের আর রিমান্ডে আনা হবে না। সেজন্য তারা ওই স্বীকারোক্তি দেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘গত ২৫ আগস্ট আবেদন করা তিন আসামির জামিন শুনানির আজ ধার্য তারিখ ছিল। আগামী বুধবার জেলা দায়রা জজ আদালতে আবারও তিন আসামির জামিন আবেদন করবো।’

আসামি আব্দুল্লাহর বাবা আজমত হোসেন বলেন, ‘মেয়েটি ফিরে এসেছে, তাহলে আমার ছেলে কেন মিথ্যা মামলায় কারাগারে থাকবে। অবিলম্বে আমার ছেলেসহ তিন জনের মুক্তি চাই।’

গত ৪ জুলাই থেকে নিখোঁজ হয় ওই কিশোরী। নিখোঁজের প্রায় দুই সপ্তাহ পর ১৭ জুলাই সদর মডেল থানায় জিডি করেন কিশোরীর মা। পরে গত ৬ আগস্ট থানায় অপহরণ মামলা করেন বাবা। পরদিন ওই মামলায় পুলিশ বন্দরের খলিলনগর এলাকার মো. আব্দুল্লাহ (২২), বুরুন্দি পশ্চিমপাড়া এলাকার ইজিবাইক চালক রাকিব (১৯) ও ইস্পাহানী খেয়াঘাটের নৌকার মাঝি খলিলুর রহমানকে (৩৬) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গত ৯ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পৃথক আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন আসামিরা। স্বীকারোক্তিতে তারা জানান, ওই কিশোরীকে নৌকা ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছেন তারা। বর্তমানে তিন জন কারাগারে আছেন।

পরে গত ২৪ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের কুশিয়ারা থেকে ওই কিশোরী ও তার স্বামী ইকবালকে আটক করে পুলিশ।

কিশোরী জীবিত উদ্ধারের ঘটনায় অভিযুক্ত তিন যুবকের পরিবারের অভিযোগ, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামীম আল মামুন রিমান্ডে নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে তিন পরিবারের কাছ থেকে ৪৬ হাজার টাকা নিয়েছেন। এরপরও রিমান্ডে নির্যাতন করে, ভয় দেখিয়ে তাদের স্বীকারোক্তি আদায় করেন। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ আগস্ট এসআই শামীমকে সদর থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।

Comments