নারায়ণগঞ্জে বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২০

বিস্ফোরণে মসজিদের ছয়টি এসি পুড়ে গেছে। ভেঙে গেছে দরজা-জানালার কাচ। ছবি: স্টার

নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ইমামসহ ২০ জন মারা গেছেন। আজ শনিবার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধদের মধ্যে এ পর্যন্ত ২০ জন মারা গেছেন। বাকিরা যারা ভর্তি আছেন, তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। অধিকাংশের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে।’

‘ফোন করে এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে দগ্ধদের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী’, বলেন ডা. সামন্ত লাল সেন।

মারা যাওয়া ২০ জন হলেন— ইমাম আব্দুল মালেক (৬০), মো. নিজাম (৪০), শিশু জুয়েল (৭), মসজিদের মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৮), রিফাত (১৮), মোস্তফা কামাল (৩৪), জুবায়েদ (১৮), সাব্বির (২১), কুদ্দুস ব্যাপরী (৭২), হুমায়ুন কবির (৭০), ইব্রাহিম (৪৩), জুনায়েদ (১৭), জামাল (৪০), রাশেদ (৩০), জয়নাল (৩৮) ও মাইন উদ্দিন (১২), রাসেল (৩০), বাহাউদ্দিন (৬০), কাঞ্চন হাওলাদার (৪০), নয়ন (২৭)। তাদের মধ্যে গতকাল দিনগত রাতেই শিশু জুয়েলের মৃত্যু হয়। তার শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। আজ ভোরের দিকে মারা যান আরও ১০ জন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মারা যান আরও একজন এবং দুপুরের দিকে মারা যান আরও দুই জন। দুপুরের পরে মারা গেলেন আরও দুই জন। সন্ধ্যার পরে আরও চার জন মারা যান। 

যে মসজিদের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, সেই মসজিদের মেসে থাকেন মিজানুর রহমান (৩৫)। তার বাড়ি পটুয়াখালী জেলা হলেও এক যুগের বেশি সময় তিনি ওই এলাকায় ভ্যান চালান। বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে তিনিও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বিস্ফোরণের সময় সবাই নফল নামাজ পড়ছিল। হঠাৎ আগুন লেগে গেলে আমরা আটকা পড়ে যাই।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন এনামুল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো ওষুধ কিনতে হয়নি। সব হাসপাতাল থেকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, ভেতরে রোগী কেমন আছে তা জানতে পারছি না। কেউ ভেতর থেকে বের হয়ে এলে তাকে প্রশ্ন করছি।’

গতকাল রাত থেকেই উৎকণ্ঠা নিয়ে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে বিস্ফোরণে দগ্ধ রোগীর স্বজনদের।

এর আগে, গতকাল রাত পৌনে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাম জামে মসজিদে ‘গ্যাসের লাইন’ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৪০ জনের মতো দগ্ধ হন। তাদেরকে ঢামেক হাসপাতালে স্থাপিত শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করানো হয়।

ঘটনার পর গতকাল নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছিলেন, ‘মসজিদের নিচ দিয়ে গ্যাসের লাইন চলে গেছে। ওই গ্যাসের লাইনের ত্রুটি থাকায় বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে।’

আরও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণে দগ্ধ ৩৭, আশঙ্কাজনক অনেকে

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

4h ago