করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে আঞ্চলিক চাপে বাংলাদেশ
করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে চার হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। শনাক্ত হয়েছে তিন লাখের বেশি। এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞ ও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা দ্রুততম সময়ে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন পাওয়ার।
ইতোমধ্যে চীন ও ভারত দাবি করেছে, তারা ভ্যাকসিন আবিষ্কারে সফল হয়েছে। এখন কেবল ট্রায়াল বাকি। প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে কূটনৈতিক দৌড়ঝাঁপও দেখা যাচ্ছে।
গত মাসে চীনের সিনোভেক বায়োটেক কোম্পানিকে তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করার অনুমতি দেয় বাংলাদেশ সরকার। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) এতে যুক্ত থাকবে। অন্য দিকে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার ভ্যাকসিন সরবরাহে দেশীয় কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশেষ প্রতিবেদন করেছে জাপানের অর্থনীতি বিষয়ক সাময়িকী নিকেই এশিয়ান রিভিউ। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর এবং যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টিক কাউন্সিলের অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো আলী রীয়াজ নিকেই এশিয়ান রিভিউকে ই-মেইলের মাধ্যমে বলেন, ‘ভারত এবং চীন দুপক্ষ থেকেই চাপ দিচ্ছে। মনে হচ্ছে, শেখ হাসিনা দুই দিকে ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করছেন।’
করোনা পরিস্থিতিতে মূলত প্রচলিত বাণিজ্য ও বিনিয়গের ক্ষেত্রে ভূ-রাজনীতি সামনে চলে এসেছে। চীন ও ভারত বৃহৎ অর্থনৈতিক অংশীদার যেখানে বাংলাদেশের মতো ছোট দেশ তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যবসা করতে গিয়ে ভারসাম্যহীনতায় ভুগছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নয়া দিল্লির সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক যে গভীরতায় পৌঁছে ছিল, সম্প্রতি সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিকাশে চীনকে পাশে রাখায় সম্পর্কের এই দূরত্ব। ভারতের নতুন নাগরিকত্ব সংশোধন আইন সেই দূরত্ব বৃদ্ধিতে খানিকটা ভূমিকা রেখেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছে চীন।
ভারতীয় কোম্পানি সেরাম ইতোমধ্যে ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি অ্যাস্ট্রেজেনেকার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের হাতে একাধিক সুযোগ আছে। তবে জাতীয় স্বার্থে কার্যকর যে ভ্যাকসিনটি আগে হাতে পাওয়া যাবে, সেটি নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
Comments